ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবরোধের কবলে রংপুরের ধানের বাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
অবরোধের কবলে রংপুরের ধানের বাজার

রংপুর: অবরোধের কবলে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের ধানের বাজার। পাঁচদিনের ব্যবধানে প্রতিমণ ধানে দাম কমেছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।


 
শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি, বড়দরগা ও কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পাঁচদিনের ব্যবধানে ৮০০ টাকার ধান ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায় নেমে এসেছে।

ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানান, অবরোধের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ধানের মোকামগুলোতে ধান কেনার জন্য আসছেন না। ফলে, স্থানীয় বাজারেও চাহিদা না থাকায় দাম নিম্নমুখী। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান ও চাল সরবরাহ করতে না পারায় হাটবাজারে ধানের দাম কমে গেছে।

এই সুযোগে এক শ্রেণীর মজুদদার ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান ক্রয় করে মজুদের পাহাড় গড়ে তুলছে।

হাজিরহাট এলাকার কৃষক ওয়াদুদ মিয়া ও সফর উদ্দিন খান জানান, অবরোধের কারণে প্রতিদিনই ধানের দাম কমছে। ধান ক্রয় করতে বড় কোনো পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাজারে আসছেন না।

তারা বলেন, এই ধান বিক্রি করে বোরো ধান রোপন এবং আলু উৎপাদনে খরচ মেটানো হয়। তাছাড়া সংসারের অন্যান্য চাহিদাও এই খাত থেকে মেটানো হয়। এ সময় ধান বিক্রি না করে তাদের উপায় থাকে না।

তাদের অভিযোগ, এ দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন মজুদদার আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কৌশলে কৃষকদের কমদামে ধান বিক্রিতে বাধ্য করছেন তারা। অজুহাত দেখাচ্ছে, দেশে অবরোধ চলছে, হরতাল, গাড়ি বন্ধ ইত্যাদি।

পীরগাছার দেউতিহাট এলাকার কৃষক বেলাল খান জানান, হাটে ২০ মণ ধান নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। ক্রেতা কম থাকায় তিনি ৭২০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করেছেন।

তিনি বলেন, চারদিন আগেও তিনি এই ধান ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলেন।

কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর এলাকার ধান ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস জানান, তার কাছে যে ধান রয়েছে, তা ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারছেন না। বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে, প্রতি মণ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। মোকাম বন্ধ থাকায় সেই ধানও তিনি ছাড়তে পারেননি।

স্থানীয় পর্যায়ে মিল, চাতাল মালিকরা কিছু কিছু করে ধান তাদের কাছ থেকে কিনছেন।

মিল মালিকরা যে দর নির্ধারণ করে দিচ্ছেন, তাতে করে ৭০০ টাকার বেশি দামে ধান কেনা যাচ্ছে না। এই দামে ধান বিক্রি করলে কৃষকদের লাভ থাকছে না।

রংপুরের ধান চালের বৃহৎ বাজার মাহিগঞ্জ চাল মালিক সমিতির সদস্য মাসুম মিয়া ও অটোরাইস মিল মালিক লোকমান হোসেন দাম কমের কারণ হিসেবে দেশের অস্থিরতার কথা তুলে ধরে বলেন, প্রতিদিন আড়ত থেকে ২০ থেকে ৩০ ট্রাক ধান দেশের বিভিন্নস্থানে যেতো। কিন্তু অবরোধের কারণে ধান কোথাও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই, তারা ধান ক্রয় করছেন না বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।