ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রানার ডিলাক্স এখন আমার গলার কাঁটা

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৬
রানার ডিলাক্স এখন আমার গলার কাঁটা ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মাঝে মাঝে মনে হয় নদীতে ফেলে দেই। যে কোন দিন ফেরি পার হওয়ার সময় মোটরবাইকটি নদীতে ফেলে দিতে পারি।

রানার মোটরবাইকের চটকদার বিজ্ঞাপন আজ আমার জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।  
 
রানার গ্রুপের রানার ডিলাক্স মোটরবাইক ব্যবহারকারী সংবাদ কর্মী মামুনুর রশিদ এভাবেই তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। ফোন করে একটানা তার দুর্ভোগের কথা বলেন তিনি।

মামুনুর রশিদ বলেন, আপনাদের প্রকাশিত রানার দুরন্ত বাইকের নিউজটি আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমি নিজেও রানারের মোটরবাইকের একজন ভুক্তভোগী। তাদের প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে রানার বাইক কিনে ফেঁসে গেছি। এটা এখন আমার গলার কাঁটা হয়ে গেছে। না পারছি গিলতে, না পারছি ফেলতে।
 
তিনি বলেন, গত জুলাই মাসে এডি৮০এস-ডিলাক্স বাইকটি কিনেছি। এরই মধ্যে কতবার যে তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে যেতে হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। ওদের সার্ভিসিং সেন্টারে গেলেই বেশ কিছু পার্টস কিনে আনার জন্য রিসিট ধরিয়ে দেয়। তিন তলায় তাদের শো-রুম থেকে বাজারের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হয় পার্টস। ছয় মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি খুচরা পার্টস কিনতে হয়েছে।
 
ওরা সার্ভিসিং ফ্রি দিচ্ছে। কিন্তু আমাকে তো খুচরা পার্টস কিনতে হচ্ছে। নতুন অবস্থায় যদি এমন হয়, তাহলে আরও একটু পুরনো হলে কি অবস্থা হবে ভাবতেই মেজাজ বিগড়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
 Runner_01
মামুনুর রশিদ বলেন, ৫ হাজার কিলোমিটার না যেতেই টায়ার আর টিউব নষ্ট হয়ে গেছে। একদিন তেলের সুইচ অফ করতে যাচ্ছিলাম, পুরো নবটি ভেঙ্গে গেছে।
 
তিনি বলেন, কেনার সময় আমাকে সেলস ম্যানেজার শামীম বলেছিলেন, লিটারে ষাট কিলোমিটার যাবেই। রাস্তায় জ্যাম কম হলে বেশিও পেতে পারেন। ওদের কথার প্রলোভনে পড়ে রানার বাইক কিনেছি। কিন্তু এখন দেখছি বিশ থেকে বাইশ কিলোমিটারের বেশি যায় না।
 
মামুনুর রশিদ বলেন, সবচেয়ে কষ্ট হয় কখন জানেন? ভালো বাইক রেখে অফিসে ঢুকলাম। লেট নাইট করে (লেট নাইট ডিউটি) মধ্য রাতে বেরিয়ে দেখি স্টার্ট নিচ্ছে না। অনেক রাতে বাইক রেখে সিএনজি ভাড়া করে বাসায় ফিরতে হয়েছে।
 
তিনি বলেন, রানার গ্রুপ বিশ্ব সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকে ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এই প্রতারণা বন্ধ হওয়া উচিত।
 
জ্বালানি বেশি খরচ প্রসঙ্গে রানার গ্রুপের ম্যানেজার (করপোরেট সেলস) ওয়াসিম বাংলানিউজকে বলেন, আসলে কোথায় বাইকটি চলছে সেটাই বড় কথা। রাজধানীতে অনেক জ্যাম, সে কারণে মাইলেজ কোন গাড়িরই ঠিক থাকে না।
 
তিনি বলেন, মাইলেজের বিষয়টি নির্ভর করে ‍বাইকের কার্বুরেটর নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কিনা তার ওপর। সঠিক ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার হচ্ছে কিনা সেটাও একটা বড় ফ্যাক্টর। গাড়িতে একজন নাকি দুইজন ড্রাইভ করছেন তাও দেখবার বিষয়। কতবার ক্লাচ ধরছেন সেটাও জ্বালানির উপর প্রভাব ফেলে।
 
ঢাকার বাইরে হাইওয়েতে গেলে মাইলেজ এক লাফে ২০ থেকে ৩০ ভাগ বেড়ে যাবে বলে দাবি করেন রানারের এই কর্মকর্তা।
 
শুধু মামুনুর রশিদ নন, অনেকেই এ রকম দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন বাংলানিউজকে। সুমন নামে এক ব্যবহারকারি জানিয়েছেন, তিন মাসের মাথায় তার বাইকের ক্লাচ প্লেট নষ্ট হয়ে গেছে। কার্বুরেটর দিয়ে তেল পড়ে যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৫
এসআই/জেডএম

** রানারে কমজোর, ফ্লাইওভারে ওঠে না

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।