ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ধীরগতির টেকসই গ্রামীণ উন্নয়নে ব্যয় বাড়লো ২৩৭ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
ধীরগতির টেকসই গ্রামীণ উন্নয়নে ব্যয় বাড়লো ২৩৭ কোটি টাকা

ঢাকা: নির্ধারিত সময়েও শেষ হয়নি গ্রামীণ মানুষের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে বাস্তবায়নাধীন ‘সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প’। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির সঙ্গে ব্যয়ও বেড়েছে।

৭৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকায় প্রকল্পটি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়। ২০১৬ সালে এসে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৯৮৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ব্যয় বেড়েছে ২৩৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।

পিছিয়ে পড়া ২১ জেলার সমস্ত উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও শেষ সময়ে কিছু উপজেলা বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও এখনো ১০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। তবে কতটি উপজেলা বাদ দেওয়া হচ্ছে তার কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

জানুয়ারি ২০১১ সাল থেকে জুন ২০১৬ মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরও এক বছর বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ।

প্রকল্পের মূল লক্ষ্য- টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, পল্লী উন্নয়ন, সামাজিক ও জেন্ডার বিষয়ক উন্নয়ন এবং প্রকল্প এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন। পল্লী এলাকার জনসাধারণের আয় বৃদ্ধি এবং পল্লী দারিদ্র হ্রাস করাও প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।

এলজিইডি সূত্র জানায়, পূর্তকাজের পরিমাণ বৃদ্ধি, অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার না হওয়া, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণে প্রকল্প সাহায্যের পরিমাণ সমন্বয়, মেয়াদ বৃদ্ধি এবং নতুন পে-স্কেলের কারণে বেতন-ভাতাসহ রাজস্ব খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাজে ধীরগতি হয়েছে।

যে কারণে প্রকল্প এলাকায় উন্নতমানের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, গ্রোথসেন্টার, হাট বাজারের উন্নয়ন, এলজিইডি ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এখনও তেমনভাবে বৃদ্ধি হয়নি। ধীরগতি ও বার বার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং নারীদের আয়বর্ধক কাজে তেমনভাবে সম্পৃক্ত করা যায়নি।

প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আলি আখতার হোসেইন বাংলানিউজকে বলেন, ২১টি জেলার ১৪৫টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু অর্থ সংকুলান না হওয়ায় কিছু উপজেলা বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজও এখনও ১০ শতাংশ বাকি আছে। আশা করছি আগামী এক বছরের মধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হবে।

ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পিডি বলেন, প্রকল্পের কাজের পরিধি বৃদ্ধির কারণে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্প এলাকা হিসেবে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, বোদা, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাংগী, হরিপুর, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও ঠাকুরগাঁও সদর, নীলফামারীর ডিমলা, ডোমার, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী সদর ও সৈয়দপুর, রংপুরের বদরগঞ্জ, গংগাচড়া, কাউনিয়া, রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

দিনাজপুরের বিরামপুর, বীরগঞ্জ, বিরল, বোচাগঞ্জ, চিরিরন্দর, ফুলবাড়ি, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, খানসামা, দিনাজপুর সদর, নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর, গাইবান্ধার ফুলবাড়ি, সদর, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি, সাদুল্লাপুর, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জে বাস্তবায়িত হবে।

মেহেরপুর জেলার সদর, গাংনী, মুজিবনগরে বাস্তবায়িত হবে। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের কিছু উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

২১ জেলায় সম্পূর্ণভাবে প্রকল্পটি কেন বাস্তবায়ন করা গেল না? এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
এমআইএস/এমজেএফ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।