ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবকাঠামো-ড্রেনেজ সমস্যায় বেনাপোলে নষ্ট হচ্ছে আমদ‍ানি পণ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৬
অবকাঠামো-ড্রেনেজ সমস্যায় বেনাপোলে নষ্ট হচ্ছে আমদ‍ানি পণ্য ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বেনাপোল (যশোর): অবকাঠামোগত ও ড্রেনেজ সমস্যার কারণে দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর বেনাপোলে কোটি কোটি টাকা মূল্যের আমদানি পণ্য নানাভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে পণ্যের গুণগতমান নষ্টের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।



বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থান সংকটের কারণে পণ্য যানজটে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। তাছাড়া বন্দরের রাস্তাগুলো খানাখন্দে ও পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ট্রাক আটকে ভোগান্তি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চললেও কর্তৃপক্ষের তেমন নজরদারি নেই। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি প্রয়াজনীয় উন্নয়ন কাজ পর্যায়ক্রমে চলছে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে জানা যায়, স্থলপথে দেশের পণ্য আমদানির অন্তত ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল হয়ে। সময় কম লাগায় ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বেশি।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি পণ্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্দরে ৩৫টি পণ্যগুদাম ও ৩টি টার্মিনাল রয়েছে। কিন্তু এগুলো প্রয়োজনের তুলনায় কম।

তারা জানান, বন্দরে আমদানি পণ্যের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু বন্দর এলাকায় অধিকাংশ সময়ই এর দ্বিগুণ পরিমাণ পণ্য জমা থাকে।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের অভ্যন্তরে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনা জমে প্রায় বন্ধ হয়ে পানি উপচে পড়ে। এছাড়া খানা-খন্দ ও গর্ত থাকায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। এতে করে জমা রাখা পণ্য পরিমাপের স্কেলগুলো প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও পণ্য গুদামের ভেতর ও বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হতে শুরু করেছে আমদানি পণ্য।

অপরদিকে, ট্রাক টার্মিনালজুড়ে ট্রাকের চেচিস পড়ে থাকায় ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ভেতরে ঢুকতে পারে না। এতে দুই/তিন দিন পর্যন্ত সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ট্রাকগুলোকে। রাস্তায় বড় গর্ত থাকায় অনেক সময় ট্রাক আটকা পড়েছে। এতে দ্রুত পণ্য সরবরাহে  বিলম্ব ঘটছে। সেইসঙ্গে যানজটে প্রতিদিনই কিছুসময় বন্ধ থাকছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি।

বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সব বৈঠকে অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে বলা হলেও এ নিয়ে সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের গুরুত্ব কম দেখা যায়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, কয়েকদিন আগে বেনাপোল বন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের  এন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করেন। এ সময় এসব সমস্যা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) নিতাই চন্দ্র সেন দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।