ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুষ্টি সমস্যার সমাধানে ‘অরেঞ্জড ফ্লেসড’ মিষ্টি আলু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৬
পুষ্টি সমস্যার সমাধানে ‘অরেঞ্জড ফ্লেসড’ মিষ্টি আলু ছবি: দিপু মালাকার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দারিদ্র্য হ্রাসসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতি অর্জিত হলেও পুষ্টিখাতের অগ্রগতি খুবই নাজুক। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হতে পারে ‘অরেঞ্জড ফ্লেসড’ মিষ্টি আলুর চাষ ও ব্যবহার।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।
 
মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। ‘কৃষি ও পুষ্টির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মইনউদ্দিন আব্দুল্লাহ।
 
ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লেভারেজিং এগ্রিকালচার ফর নিউট্রিশান ইন সাউথ এশিয়া (লানসা) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
 
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল বায়েস।

‘কৃষি খাদ্য ভ্যালু চেইন উদ্যোগসমূহ: খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতার অংশ হিসেবে অরেঞ্জ ফ্লেসড মিষ্টি আলু চাষের উদ্যোগ’ শীর্ষক গবেষণা স্ট্যাডি তুলে ধরেন ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রধান ড. সিরাজুল ইসলাম।
 
ব্র্যাকের গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, দারিদ্র্য হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আগ্রগতি অর্জন করলেও পুষ্টি পরিস্থিতিতে সন্তোষজনক অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। এখনও বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নিচে ৭৩ লাখ শিশু খর্বাকার, ৬৫ লাখ শিশু অপেক্ষাকৃত কম ওজনের এবং ২৯ লাখ শিশু শারীরিকভাবে দুর্বল। তাই খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সমস্যা মোকাবেলায় কৃষিজ উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি কৃষি খাদ্যের ভ্যালু চেইন বা খামার থেকে বাজারের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে এ মুহূর্তে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
 
ড. সিরাজুল ইসলাম লানসার গবেষণার উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরে বলেন, ‘কিভাবে কৃষিখাদ্যের ভ্যালু চেইন অর্থাৎ খামার থেকে খানা পর্যন্ত (বাজারের মাধ্যমে) খাদ্য সরবরাহ পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো যায় এখন সেদিকেই আমাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এতে দরিদ্র মানুষের পক্ষে পর্যাপ্ত ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে’।
 
পুষ্টি সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে কমলা রঙের মিষ্টি আলু চাষ একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি তার স্ট্যাডিতে উৎপাদন ও দামের তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, সাধারণ আলু যেখানে প্রতি হেক্টরে ৩০-৩৫ টন হয়, সেখানে অরেঞ্জড ফ্লেসড মিষ্টি আলু চাষ হয় প্রতি হেক্টরে ৪০-৪৫ টন। মৌসুম চলাকালে যেখানে গোল আলুর দাম প্রতি কেজি ১০ টাকা, সেখানে কমলা রঙের মিষ্টি আলুর দাম প্রতি কেজি ৬-৭ টাকা। আর ভিটামিনের দিক দিয়ে অন্যান্য আলুতে বি-ক্যারোটিন একেবারে সামান্য।   অথচ কমলা রঙের মিষ্টি আলুতে বি-ক্যারোটিনের মাত্রা অনেক বেশি।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মইনউদ্দিন আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমান সরকার দেশের জনগণের পুষ্টি উন্নয়ন ও বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন: জাতীয় পুষ্টি নীতি ২০১৫ (এনএনপি ২০১৫) প্রণয়ন, ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিস চালু করা ইত্যাদি। কৃষি সম্প্রসারণ নীতিতেও (এনএইপি ২০১২) এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘এনজেল’ প্রকল্প পুষ্টি বর্ধনে প্রয়োজনীয় কৃষি কর্মসূচিতে বিনিয়োগের সুযোগ ও পরিকল্পনা যাচাই করছে।
 
ব্র্যাকের ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট ইউনিটের প্রধান এন্ড্রু জেনকিনসের সঞ্চালনায় সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) চিফ অব পার্টি ড. আকতার আহমেদ, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো বর্নালী চক্রবর্তী, লানসা-ব্র্যাকের গবেষক ড. উত্তম কুমার দেব প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়:  ১৭১৫ ঘণ্টা,  সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৬
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।