ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেঁধে দেওয়া দামে জমি মিলছে না পায়রা বন্দর নির্মাণে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
বেঁধে দেওয়া দামে জমি মিলছে না পায়রা বন্দর নির্মাণে

ঢাকা: বেঁধে দেওয়া দামে জমি মিলছে না, ফলে জমি অধিগ্রহণও সম্ভব হয়নি। এ কারণে পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের কাজের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৮৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির জন্য ৬ হাজার ৬৯ দশমিক ১৯ একর জমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু গত জুন মাস পর্যন্ত এক একর জমিও অধিগ্রহণ করা যায়নি। বেঁধে দেওয়া দামে প্রকল্প এলাকায় জমি অধিগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে এগিয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের স্বপ্নের প্রকল্প পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজ। ১৬ একর জমিতে স্বল্প পরিসরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান আছে। পায়রা বন্দর বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে এখানকার চিত্র। ভবিষ্যতে জমির দামও কয়েকগুণ বাড়বে। যে কারণে স্থানীয়রা জমি ছাড়তে চাচ্ছেন না। এখনই জমির দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

মন্ত্রণালয় জানায়, অনুমোদিত ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। জমি অধিগ্রহণসহ অন্য সকল কাজই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে।

গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের নির্ধারিত আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ শতাংশের বিপরীতে প্রকৃত অর্জন ২৭ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ কম। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৩১৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের মূল ব্যয়ের ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১৭টি প্রস্তাব দিয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় ব্যপক পরিমাণে বাড়বে’।

‘এখন একর প্রতি কতো টাকা খরচ করে জমি অধিগ্রহণ করা যায়, সেটি রিভিউ করা হবে। স্থানীয়রা বহুদিন ধরেই ভিটা-মাটিতে বসবাস করছেন। কৃষিজমি ও ঘর-বাড়ি কেউ ছাড়তে চাইবেন না, জমির দাম একটু বেশি চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। তারপরও যেন প্রকল্পের ব্যয় অতিরিক্ত না বাড়ে, স্থানীয়রাও যথাযথভাবে ক্ষতিপূরণ পান, সেসব চিন্তা করেই জমির দাম রিভিউ করা হবে’।

তিনি বলেন, ‘তবে ১৬ একর জমিতে পাঁচতলা প্রশাসনিক ভবনসহ স্বল্প পরিসরে অবকাঠামো তৈরির কাজ চলমান আছে। ওয়্যার হাউজ নির্মাণ, পাইলট ভেসেল ক্রয়সহ এলাকা জুড়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পোর্ট রেডিও কন্ট্রোল ষ্টেশন স্থাপন, এক হাজার কেভিএ বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। তবে সংযোগ নদীর মার্কিং ও ড্রেজিংয়ে কোনো অগ্রগতি নেই’।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ক্যাপ্টেন এম মুনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন,  ‘প্রকল্পের বৃহৎ কাজের বাস্তবায়ন নির্ভর করছে ৬ হাজার ৬৯ দশমিক ১৯ একর জমির ওপরে। ফাস্ট  ট্র্যাক প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তী ধাপে জমির দাম নির্ধারণও তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওপর নির্ভর করছে। সংশ্লিষ্টরা বসেই জমির দাম নির্ধারণ করা হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।