ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রিন ডেল্টার অবৈধ ব্যয় ১৫৬ কোটি টাকা

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৬
গ্রিন ডেল্টার অবৈধ ব্যয় ১৫৬ কোটি টাকা

ঢাকা: ব্যবস্থাপনার নামে ১৫৬ কোটি টাকা অবৈধ ব্যয় দেখিয়েছে বেসকারি খাতের বিমা কোম্পানি গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটির এ অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বিশেষ অডিট ফার্ম (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আইডিআরএ’র তথ্য রয়েছে, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ মিলে নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে ওই পরিমাণ টাকা বেশি খরচ দেখিয়েছে। এ কারণে আইডিআরএ’র সর্বশেষ বোর্ড সভায় অডিট ফার্ম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের কাছে এ সংক্রান্ত নিদের্শনা পাঠানো হবে।

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, জীবন বিমার পাশাপাশি সাধারণ বিমা খাতের গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নিয়ম বহির্ভূত খরচ পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, আইনে নির্ধারিত অর্থের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয়ের কারণে কোম্পানির বিমা দাবি পরিশোধের সক্ষমতা কমে যায়। পাশাপাশি শেয়ার হোল্ডাররা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হন। তাই কোম্পানির নিয়ম বহির্ভূত খরচের কারণ জানতে কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে ৬৬১ কোটি টাকা। অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৫০৫ কোটি টাকা করতে পারবে। সে হিসাবে গত সাত বছরের ১৫৬ কোটি টাকা বেশি অবৈধ ব্যয় করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা বিমা আইন-২০১০ এর ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা-১৯৫৮ এর লঙ্ঘন।

অবৈধ ব্যয়ের মধ্যে ২০০৯ সালে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ১৩ কোটি টাকা, ২০১১ সালে ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারজানা চৌধুরী মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখন দেশের বাইরে আছি। দশ মিনিট পরে কথা বলবো। আপনি আমাকে বিষয়টি এসএমএস করেন’।  

তাকে এসমএস করে জানানো হলে এরপর তিনি আর কোনো উত্তর দেননি।

তবে কোম্পানির সচিব বাংলানিউজকে জানান, গত সাত বছরে কোম্পানির ১৫৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় হলেও এটি অবৈধ নয়।  

তিনি বলেন, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের পর আইডিআরএ’র কাছে টাকা মওকুফের (ওয়েবার) আবেদন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এমএফআই/এমজেএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।