এর মধ্যে ব্যবস্থাপনার নামে ২৮ কোটি ৫ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় দেখিয়েছে কোম্পানিটি।
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বিশেষ অডিট ফার্ম (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ। গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকার পর্যালোচনাসহ তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।
বিমা আইন ২০১০ এর ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২ মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়টি চিঠি দিয়ে কোম্পানিগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে আইডিআরএ।
বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিমা আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে- আইনের অন্য কোনো বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিমা ব্যবসা পরিচালনাকারী যে কোনো বা সব বিমা কোম্পানির বিমা সংক্রান্ত সব লেনদেন, রেকর্ডপত্র, দলিল দস্তাবেজ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এক বা একাধিক নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষা করাতে পারবে।
এ ধারার অধীনে নিযুক্ত নিরীক্ষক বিমাকারীর বিমা ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ডপত্র, হিসাব বই, রেজিস্টার, ভাউচার, পত্র এবং অন্য সব দলিল পরিদর্শন করতে পারবে এবং এ উদ্দেশ্যে বিমাকারীর যে কোনো পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বক্তব্য শুনতে এবং বিমাকারীর কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র ও তথ্য তলব করতে পারবে।
ধারা অনুসারে, নিরীক্ষা কাজের জন্য নিয়োগ পাওয়া নিরীক্ষক সর্বোচ্চ ৪ মাসের মধ্যে একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন। প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের ৪টি কপি আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে হবে।
আইডিআরএ’র কাছে তথ্য রয়েছে, কোম্পানটি ব্যবস্থাপনার নামে ২৮ কোটি ৫ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে। বেসকারি খাতের বিমা খাতের কোম্পানিটি ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়েছে ৫৫ কোটি ৫ লাখ টাকা।
অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় ২৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। সেই হিসাবে গত সাত বছরে ২৮ কোটি ৫ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা বিমা আইন ২০১০ এর ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা ১৯৫৮ এর লঙ্ঘন।
অবৈধ ব্যয়ের মধ্যে ২০০৯ সালে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে।
আইডিআরএ-এর সদস্য জুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, বিমা কোম্পানিটিতে নিরীক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রোববার মুঠোফোনে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কিউ এম ওয়াজেদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য আলাদা লোক রাখা হয়েছে। এখন আমার মিটিং আছে। আমি কিছু বলতে পারবো না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এমএফআই/আরআইএস/এমজেএফ