ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীদের

ঢাকা: লন্ডনে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ট্রেড মিনিস্টার্স সম্মেলনে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কমনওয়েলথ বাণিজ্যমন্ত্রীরা। সম্মেলনে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ অংশগ্রহণকারীদের জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের মডেল হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৭৮ ভাগ, এখন তা ১৫ দশমিক ৫ ভাগ,  শিল্পে ২৮ দশমিক ১ ভাগ এবং সার্ভিস সেক্টরে  ৫৬ দশমিক ৩ ভাগ।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্যের অভাব ছিল, আজ ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের অভাব নেই। বরং দেশের চাহিদা পূরণ করে বাংলাদেশ এখন চাল রফতানি করছে। দেশের রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নতুন অর্থ বছরে রফতানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০২১ সালে হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার।

মন্ত্রী বলেন, ‘ভিশন ২০২১’ সফল করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১-৭২ অর্থ বছরে জাতীয় বাজেট ছিল মাত্র ৫২৮ কোটি টাকার। অথচ  ২০১৬-১৭ বছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার গত বছর ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। মাথাপিছু আয় এক হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার। দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রম এখন বেশির ভাগই ডিজিটাল হয়েছে। সার্ভিস সেক্টরে এখন অটোমেশন চালু করা হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে অফিসের কার্যক্রম চলছে। দেশের মানুষ এখন সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সেবা ভোগ করছে।

কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের উদ্যোগে শুক্রবার ( মার্চ ১০) লন্ডনের ল্যানকাস্টার হাউজে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ট্রেড মিনিস্টার সম্মেলনের টেকনোলজি এন্ড ইনোভেশন এবং ক্রিয়েটিং এন এক্সপোর্ট ইকোনমি বিষয়ের উপর অনুষ্ঠিত রাউন্ড টেবিল বৈঠকে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল রাষ্ট্র এবং মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। দেশ ইতোমধ্যে মধ্য আয়ের দেশে প্রবেশ করেছে, ২০২১ সালের মধ্যে পুরো মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। দেশের মানুষ এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করছে। দেশে ৫ হাজার ২০০ টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রযুক্তির সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। ৬ দশমিক ৭ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১১ দশমিক ৯ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সে কয়েকটি সেক্টরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তার মধ্যে আইটি সেক্টরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আইটি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত যুব শক্তি এখন আইটি সেক্টরে সফল ভাবে কাজ করছে। এ খাতের রফতানি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এসডিজি সফল ভাবে অর্জন করবে। বাংললাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশে থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়। এলডিসি ভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেওয়া ‘এভরিথিংস বাট আর্মস’ (ইবিএ)-এর আওতায় সম্পূর্ণ বাজার সুবিধা পেয়ে আসছে। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে যাতে এ সুবিধা অব্যাহত থাকে সে বিষয়ে যুক্তরাজ্যের নীতি নির্ধারকদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

এ সম্মেলনে ৬টি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এগুলো হলো- ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইজি অফ ডুয়িং বিজনেস, টেকনোলজি এন্ড ইনোভেশন, বিজনেস এন্ড সাসটেইনেবিলিটি, ক্রিয়েটিং অ্যান্ড এক্সপোর্ট ইকোনমি এবং এ্যাট্রাক্টিং ইনভেস্টমেন্ট। সম্মেলনে কমনওয়েলথ ভুক্ত ৩৭টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী যোগদান করেন।  সম্মেলন শেষে আজ দেশে ফিরছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।