‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এসব যানবাহন চায় বিবিএস। ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পে যদি এতো গাড়ি দেওয়া হয়, ভাড়া বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা।
সরকারি খাত থেকে এতো বেশি যানবাহন এক প্রকল্পে সংস্থান করা কঠিন বিবেচনায় তাই ৫২টি যানবাহনের অনুমতি দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
১০ বছর অন্তর অন্তর শুমারি পরিচালনা করা হয়। ২০০৮ সালের চতুর্থ কৃষি শুমারির পর ২০১৮ সালে পঞ্চম শুমারি হতে যাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পরিচালিত কৃষিশুমারিতে গ্রাম ও শহরের সব তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
বিবিএস সূত্রের দাবি, ‘আদম শুমারি-২০১১’ প্রকল্পের মাধ্যমে আগেই ২৩টি জেলায় গাড়ি সরবরাহ করা হয়েছিলো। বর্তমানে ‘কৃষি শুমারি-২০১৮’ প্রকল্পের আওতায় বাকি ৭৭টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহে ওই ৭৭টি গাড়ি চালাতে প্রয়োজন ৭৭ জন চালক। শুমারি চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে এ সকল গাড়ি সার্বিক কর্মকাণ্ড তদারকি ও সমন্বয়ে ব্যবহার করা হবে। এর ফলে বিবিএসের তথ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি পাবে’।
‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিশুমারি। সরকারের নীতি নির্ধারণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে কৃষি জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, কৃষক, শষ্য উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদন এবং পাণিসম্পদ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে’।
গণনা এলাকা যাচাই ও চূড়ান্তকরণ, গণনা সংক্রান্ত ম্যাপ ও খানা তালিকা হালনাগাদ করা, মাঠ পর্যায়ে কৃষি খামারের গণনা, তথ্য সংগ্রহ জরিপ ও জাতীয় পর্যায়ে আর্থিক গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। এর পাশাপাশি জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। এসব কাজ সম্পন্ন করতে যানবাহনগুলো জরুরি’।
চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে এ তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৫০ হাজার শুমারি গণনাকারী, ২৪ হাজার ৭০০ জন সুপারভাইজার, মাস্টার ট্রেইনার, জোনাল অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা থাকবেন।
অন্যদিকে অর্থ বিভাগের জনবল নির্ধারণ কমিটি মোট ৫২টি চালক পদের সুপারিশ করেছে। ৫২টি যানবাহন কেনা ও চালক নিয়োগের বিষয়ে একমত পরিকল্পনা কমিশনও।
এ কারণে ৭৭টি যানবাহনের স্থলে ৫২টি যানবাহনের প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা কমিশন। কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভাও বিবিএসের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি। অর্থ বিভাগও তাই এটি আটকে দিয়েছে। এখন প্রকল্পের এতো বেশি যানবাহনের অনুমোদন নির্ভর করছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার ওপরে।
বিবিএসের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘কৃষি শুমারি বাস্তবায়নে আমরা যে পরিমাণে যানবাহন ও চালক চেয়েছিলাম, তা পাইনি। পরিকল্পনা কমিশন অনুমোদন না দেওয়ায় আটকে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। পরিকল্পনা কমিশন ৫২টি যানবাহনের অনুমতি দিয়েছে। সামনে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। তারপরও একনেক সভায় প্রকল্পটির সার্বিক বিষয় নির্ধারণ করা হবে’।
বাংলাদেশে আবাদযোগ্য ভূমির পরিমাণ, বসতবাড়ির জন্য ব্যবহৃত ভূমির পরিমাণ ও কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত মানুষের চিত্র তুলে ধরেছিলো কৃষি শুমারি-২০০৮। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্যবহৃত ভূমির পরিমাণ দুই কোটি ২৯ লাখ একর। এর মধ্যে চাষের আওতায় আছে এক কোটি ৮৮ লাখ একর। দেশের কৃষকদের বোরো ধান চাষে বেশি আগ্রহী হওয়ার চিত্রও উঠে এসেছে ওই শুমারিতে।
এর আগে ১৯৭৭, ১৯৮৩-৮৪ ও ১৯৯৬ সালে অন্য তিনটি কৃষিশুমারি হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১০
এমআইএস/এএসআর