ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সব ব্যাংকে একই সফট্‌ওয়্যার ব্যবহারে ঝুঁকি কম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৭
সব ব্যাংকে একই সফট্‌ওয়্যার ব্যবহারে ঝুঁকি কম কর্মশালার অতিথি ও আলোচকরা। ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেছেন, দেশের সকল ব্যাংকে একই সফট্‌ওয়্যার ব্যবহার করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করলে সাইবার ঝুঁকি ও আর্থিক ক্ষতি দু’টিই কমানো সম্ভব। বিদেশি সফট্ওয়্যার ব্যবহারে বড় অংকের অর্থ ব্যয় হলেও এখনও ঝুঁকিমুক্ত হয়নি ব্যাংক খাত।

বৃহস্পতিবার (০৪ মে) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘আইটি অপারেশনস্‌ অব ব্যাংক’ শীর্ষক কর্মশালা উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান  বলেন, কিছু কিছু ব্যাংক তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে।

এ খাতে তাদের বাজেট যেমন কম, কেনাকাটায়ও দেরি করছে। আবার কর্মীদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে ব্যাংকগুলোকে বের হয়ে আসতে হবে।

আইটি নিরাপত্তা বাড়ানো ও সচেতনতা তৈরির ওপর জোর দেন তিনি।
 
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আইটি ও সাইবার সিকিউরিটিসহ সাতটি বিষয়ের ওপর বিআইবিএম পর্যালোচনা ও গবেষণা করে আসছে। ব্যাংকিং খাতের সেবার মান বাড়াতে ব্যাংকগুলো বিআইবিএমের সুপারিশের আলোকে ব্যবস্থা নিতে পারে।
 
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংক অডিটে প্রত্যেক টিমের মধ্যে একজন করে দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। কারণ, অডিটের সময় আইটি দুর্বলতা ধরা না পড়ার কারণে বড় বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, ব্যাংকিং খাতে কয়েক ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এসব জালিয়াতির জন্য কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংকাররাই দায়ী। আবার কিছু ঘটনা গ্রাহকদের অসচেতনতার কারণে ঘটছে। সুতরাং, উভয় পক্ষকেই দক্ষ হতে হবে।
 
বিআইবিএমের পরিচালক  ড. শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, সাইবার সিকিউরিটি কিংবা গুরুপূর্ণ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকা উচিত নয়। নিজস্ব উদ্যোগেই আইটিসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করতে হবে।
 
সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিদেশি সফট্‌ওয়্যারের সমালোচনা করা হলেও হঠাৎ করে দেশি সফট্‌ওয়্যার ব্যাপকভাবে বাড়ানো ঠিক হবে না। দেশি ও বিদেশি সফট্‌ওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় করেই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
 
পূবালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ব্যাংকে সাইবার সিকিউরিটি জোরদার করতে ইথিক্যাল হ্যাকার ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গাইডলাইন পুরোপুরি অনুসরণ করলে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক দেব দুলাল রায় বলেন, দেশি সফট্‌ওয়্যার ব্যবহার না করে ব্যাংকগুলো অহেতুক বিদেশি সফট্ওয়্যারের দিকে ঝুঁকছে। ব্যাংকের অর্থে অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ কিংবা অন্য কোনো লাভের আশায় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা এ কাজ করছেন।

তিনি বলেন, ব্যাংক নিরীক্ষায় আইটি বিষয়টি এখনও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ব্যাংকগুলোর কল সেন্টারের অবস্থাও খারাপ। গ্রাহকের সেবার মান বাড়াতে এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।
 
কর্মশালায় ‘আইটি অপারেশনস্‌ অব ব্যাংক’ শীর্ষক উপস্থাপিত প্রতিবেদনের ওপর পর্যালোচনায় অংশ নেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আলম, সহকারী অধ্যাপক কানিজ রাব্বি ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের আইটি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ এমদাদুল হক খান।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৭
এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।