ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেয়াদ-ব্যয় বাড়ছে পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্পের

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
মেয়াদ-ব্যয় বাড়ছে পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্পের  বিআরডিবি (সংগৃহিত)

ঢাকা: পাঁচ বছরেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছেনি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে চলমান ‘পল্লী জীবিকায়ন’ প্রকল্পের (পজীপ, দ্বিতীয় পর্যায়) কাজ। ফলে মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)।

বিআরডিবি সূত্র জানায়, ২০১২ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া ৩৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি চলতি জুন মেয়াদে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিলো। নতুন প্রস্তাবে মেয়াদ এক বছর ও ব্যয় ২৩৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বাড়তে যাচ্ছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ দিয়ে পল্লী অঞ্চলের মোট তিন লাখ ৬০ হাজার বিত্তহীন-দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করতে দেশের দেশের ৪২টি জেলার ১৯০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রকল্পটি। তাদেরকে সমবায় সমিতির আওতায় এনে বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণোত্তর ১১ শতাংশ সুদে ঋণ সহায়তার মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত করে দারিদ্র্য নিরসনও এর লক্ষ্য।

ক্ষুদ্র ব্যবসা, গরু মোটা-তাজাকরণ, হাঁস-মুরগি পালনসহ মোট ৩৫টি আয়বর্ধক খাতে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায় এক বছর থেকে ঋণ দেওয়া শুরু হয়। অন্য কাজের ক্ষেত্রে এক বছরের পর থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু হয়। কোন কাজে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, তা বিবেচনা করেই সুদ নেওয়া হচ্ছে।
 
বিআরডিবি সূত্র জানায়, নতুন প্রস্তাবে প্রকল্পের প্রশিক্ষণোত্তর ঋণ সহায়তা ১৮০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। এসএমই কার্যক্রম অন্তর্ভূক্তকরণ ও পোস্ট ট্রেনিং সাপোর্ট খাতেও ব্যয় বাড়িয়ে ১৮০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্তমানে প্রশিক্ষণোত্তর পর্যায়ে ৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হচ্ছে। সুফলভোগীদের চাহিদা ও বাজারমূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্ষুদ্র ঋণের সিলিং ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যে সকল সুফলভোগী দারিদ্র্যসীমা জয় করেছেন, তাদের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
 
তবে কোন কোন ট্রেডে কতোজনকে কি পরিমাণ ঋণ দেওয়া হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে এসএমই নীতিমালা মেনেই নির্ধারিত হবে।
 
ঋণ তহবিল খাতে এখন ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে আদায় ও পুনঃবিনিয়োগ করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, নতুন জাতীয় পে স্কেল-২০১৫ বাস্তবায়িত হওয়ায় সংশোধিত ডিপিপিতে প্রকল্পে কর্মরত জনবলের বেতন-ভাতার শতভাগ জিওবি খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেন প্রকল্পের আয় বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিজস্ব অর্থায়নে চলতে পারে। কর্মকর্তাদের জন্য নতুন করে ৩৮টি মোটরসাইকেলও কেনা হবে।
 
বিআরডিবি'র মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম জানান, ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ায় প্রকল্পের স্থায়ী আমানতের সুদ কমে গেছে। পর্যাপ্ত ঋণ তহবিলের অভাবে প্রকল্পের নিজস্ব আয় কাঙ্খিত পরিমাণে অর্জিত হচ্ছে না। সে কারণে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
বিআরডিবি’র যুগ্ম-পরিচালক (পরিকল্পনা) আখলাসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের ২৪ শতাংশ বা চার কোটি মানুষ এখনও দরিদ্র। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় দারিদ্র্য নিরসন করা হচ্ছে। তার মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। কিছু সময় প্রকল্পটি বন্ধ ছিলো। সবাই গরিব মানুষের জন্য বক্তৃতা দেন, কিন্তু কাজ করেন না। যে কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়-ব্যয় বার বার বাড়ছে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।