ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এতো পেঁয়াজ তবু দাম বেশি

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এতো পেঁয়াজ তবু দাম বেশি ট্রাক থেকে পেঁয়াজের বস্তা নামিয়ে ভ্যান তোলা হচ্ছে গুদামে নেওয়ার জন্য। ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ার কাঠালতলা-বড়গোলা সড়কের পূর্বপাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল পণ্যবোঝাই একাধিক ট্রাক। সিরিয়াল অনুযায়ী ট্রাক থেকে পেঁয়াজের বস্তাগুলো
শ্রমিকরা নামিয়ে ভ্যানে করে মহাজনের গুদামে রাখছেন।

পাশেই চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে পণ্যের মালিক ও তার লোকজন বস্তা গুনে খাতায় লিখছেন। প্রায় দশটি ট্রাকের মধ্যে দু’একটি ছাড়া সবগুলোতে পেঁয়াজ বোঝাই।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে দেখা যায় বগুড়ার শহরের ঐতিহ্যবাহী রাজাবাজারের রাজ ভাণ্ডার, মেসার্স এমআর ট্রেডার্সসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে শতশত বস্তা এলসির পেঁয়াজ গুদামে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন ভোরে এখানে ট্রাক আসে পণ্য বোঝাই করে। সেই পেঁয়াজগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে মহাজনের গুদামে রাখা হচ্ছে।

এ পেঁয়াজ মহাজনদের খুচরা বিক্রেতার হাত হয়ে চলে যাচ্ছে ক্রেতা সাধারণের হাতে। পাইকারী এলসির প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৩৫ - ৩৮ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছিলো বাজারে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা দরে। ট্রাক থেকে পেঁয়াজ নামাতে ব্যাস্ত শ্রমিকরা।  ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ
মহাজনের গুদাম ঘরের রাস্তার সামনে দিয়ে একাধিক ক্রেতা- খুচরা বিক্রেতা বাজারে যাচ্ছিলেন। পেঁয়াজের পাইকারী দর ক্রেতা- খুচরা বিক্রেতার কানে আসা মাত্র কয়েকজন মহাজনের ঘরে ভেতরে প্রবেশ করেন।
 
ঘরে প্রবেশ করতেই ক্রেতা আশরাফ আলী, মোজাফফর হোসেন, ইয়াসিন মোল্লার চোখ যেন ছানাবড়া হয়ে উঠলো।
 
এ সময় বাংলানিউজের প্রতিবেদককে ক্রেতারা বললেন, ভাই দেখেন গুদামে শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ ভর্তি বস্তা। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। এতো পেঁয়াজ থাকার পরও দাম বেড়েই চলছে। আমরা মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। এতো দাম দিয়ে জিনিসপত্র কিনে কতো দিন টিকে থাকাতে পারবো? এতো পেঁয়াজ তবু দাম বেশি কেন প্রশ্ন এসব ক্রেতা সাধারণের। থরে থরে রাখা পেঁয়াজের বস্তা।  ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজআবার একই বাজারে খুচরা প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা, এলসি পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজ ভাণ্ডারের মালিক রাধা বাবু, মেসার্স এমআর ট্রেডার্সের মালিক মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বন্যায় ভারতের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। দেশে আগাম বৃষ্টিপাত ও বন্যায় পেঁয়াজের অবস্থা একই।

এ সময়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আসে। কিন্তু এবার আসছে না। যতো টুকু আসছে তার দামও বেশি। পেঁয়াজের পাইকারী বাজার।  ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ
মালিকরা আরও জানান, ভারতীয় রফতানি কারকরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। তারা এ দেশীয় আমদানি কারকদের কাছে সরাসরি পেঁয়াজ বিক্রি করছে না।

ভারতের ব্যবসায়ী কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রিতে এবার বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই ইচ্ছে করলেও দেশীয় ব্যবসায়ী চাহিদা মতো পেঁয়াজ আমদানি করতে পারছে না। এসব কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সামনে ঈদ এ কারণে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে -যোগ করেন এ দুই ব্যবসায়ী।

তাদের দাবি, বেশি দামে পণ্য কিনলেও লাভ আগের মতোই সীমিত। তবুও বেশি পুঁজি খাটাতে হচ্ছে ব্যবসায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।