ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশ ব্যাংকে শোক দিবসের সভা স্থগিত, বিক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
বাংলাদেশ ব্যাংকে শোক দিবসের সভা স্থগিত, বিক্ষোভ

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় পুরাতন বেতন স্কেলে ইনসেনটিভ বোনাসের অনুমোদন করায় তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ঘটনার পর স্থগিত করা হয়েছে পূর্ব ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা।

২০১৬ সাল থেকে সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামোর আলোকে তারা বেতন পাচ্ছেন। নতুন স্কেলের আলোকে ঈদ বোনাসসহ সব ভাতা দেওয়া হচ্ছে।

অথচ রোববার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক থেকে তাদের ২০১৫ সালের স্কেল অনুযায়ী পাঁচটি ইনসেনটিভ বোনাসের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের ঠকানো হয়েছে। কেননা নতুন স্কেলে আড়াইটি বোনাস দেওয়া হলেও টাকার অংকে পুরাতন স্কেলের তুলনায় পাঁচটির বেশি সুবিধা পেতেন।

পুরাতন স্কেলে ইনসেনটিভ বোনাস ঘোষণার প্রতিবাদে সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে তিনটা পর্যন্ত ব্যাংক চত্বর ও গভর্নর ভবনের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের কারণে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা সভা স্থগিত করা হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিলো অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, কর্মচারী ইউনিয়নসহ (সিবিএ) বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় শোকদিবস পালন কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে বিকেল পাঁচটায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিলো ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের।
 
এছাড়া আলোচক হিসেবে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ও এসকে সুর চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। তবে বিকেল চারটায় মাইকিং করে জানানো হয় অনিবার্য কারণে শোক দিবসের পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা সভা স্থগিত করা হয়েছে।
 
এর আগে কর্মকমর্তা ও কর্মচারীদের সব সংগঠনের ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চত্বর পরে গভর্নর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) অফিসার্স কাউন্সিলের ডাকা বিশেষ সাধারণ সভা থেকে পরবর্তী কমসূচি ঠিক করা হবে।
 
বিক্ষোভের পাশাপাশি অফিসার্স কাউন্সিলের একটি প্রতিনিধি দল দুপুর একটার দিকে গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি সম্বলিত একটি চিঠি দেন। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্ষদকে দেওয়া বিভিন্ন ক্ষমতা উল্লেখ করে পুন:বিবেচনার দাবি জানানো হয়।
 
গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে ফিরে এসে এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের যুগ্ম পরিচালক নওশাদ মোস্তফা বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এ ইনসেনটিভ বোনাস প্রত্যাখান করে অবিলম্বে নতুন স্কেলে বোনাস দেওয়ার দাবি জানিয়ে গভর্নর বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেখানে ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে গভর্নর জানিয়েছেন সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির আপত্তি এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের ফলে এমনটি হয়েছে। তবে নতুন স্কেল অনুযায়ী বোনাসের বাকি অংশ হিসাব করে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হলে আগামীতে সবাইকে বোনাস দেওয়া হবে।
 
প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে গভর্নর শান্তিপূর্ণভাবে যেন শোক দিবসের আলোচনাটি করা যায় এজন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। তবে তার এ আহ্বান প্রত্যাখান করে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আগে তাদের দাবি মেনে নতুন স্কেলে বোনাস অনুমোদন করতে হবে। এরপর আলোচনা সভার আয়োজন করতে হবে। এর কিছুক্ষণ পর শোক দিবসের পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা সভা স্থগিতের ঘোষণা আসে।
 
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, সাময়িকভাবে পুরাতন স্কেলে ইনসেনটিভ বোনাস অনুমোদন করেছে পরিচালনা পর্ষদ। নতুন স্কেলে ইনসেনটিভ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এজন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এসই/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।