ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিগারেট খাতে বিএটিবি’র ফের হাজার কোটি রাজস্ব ফাঁকি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
সিগারেট খাতে বিএটিবি’র ফের হাজার কোটি রাজস্ব ফাঁকি

ঢাকা: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি সিগারেট কোম্পানি হিসেবে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর উৎপাদিত নিন্ম স্তরের সিগারেট যথা ক্রমে ডারবি, পাইলট ও হলিউডের প্রতি ১০ শলাকা ৩৫ টাকায় বিক্রয়ের নির্দেশনা দেয়া হয়।

এতদসংক্রান্ত এসআরও (SRO) জারী করেও বর্তমানে সে নিয়মে রাজস্ব আদায় করছে না। বরং এ কোম্পানিকে কম দামে সিগারেট বিক্রয় করে রাজস্ব ফাঁকি এবং অতিরিক্ত মুনাফা দেখিয়ে তা বিদেশে ডিভিডেন্ড আকারে পাঠিয়ে যাচ্ছে।

 

২০১৭ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিএটিবি’র ন্মিস্তরের সিগারেট বিক্রয় খাতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব কম দিয়েছে।
 
বিএটিবি ব্রাজিলের সবচেয়ে দামি সিগারেট ব্র্যান্ড ‘ডারবি’ দেশীয় বাজারে মাত্র ২৭ টাকায় বিক্রি করে যাচ্ছে। ফলে গত ৮ মাসে মোট বিক্রিত শলাকায় রাজস্ব কম পেয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। দামি ব্র্যান্ডের সিগারেট ভোক্তাদের মাঝে ব্যাপক সমাদৃত হওয়ায় একই সেগমেন্টে দেশীয় কোম্পানির উৎপাদিত ব্র্যান্ডগুলো চরমভাবে বাজার হারাচ্ছে।

সম্প্রতি দেশীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় শতভাগ দোকানেই ডারবি পাওয়া যাচ্ছে। দোকানিদের মতে, ‘ভোক্তারা যখন একটি বিদেশি দামি ব্র্যান্ড কম দামে পায় তাহলে অন্য ব্র্যান্ডের সিগারেট কেন খাবেন?’ 

বর্তমানে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, দেশের নাম করা কয়েকটি দেশীয় সিগারেট কোম্পানি তাদের উৎপাদিত অনেক ব্রান্ডের সিগারেট উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। ফলশ্রুতিতে তারা সরকারকে এক সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রাজস্ব দিলেও বর্তমানে বাজার না থাকায় রাজস্ব দেওয়ার পরিমাণ কমে গেছে, যা প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়।  

কয়েকটি দেশীয় সিগারেট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তাদের ব্যবসায়িক অবস্থান দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে এবং তারা বিএটিবি’র আগ্রাসী বিপণন কৌশলে মার খেয়ে রুগ্ন হওয়ার পথে।

যেখানে ১০ বৎসর আগেও দেশে প্রায় ১৭টি ছোট বড় সিগারেট কারখানা ছিলো, বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র পাঁচটিতে। প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান কমে গেছে। ওই শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো ওপর নেমে এসেছে ভয়াবহ দুর্ভোগ।  

পেশা পরিবর্তনের কারণে অনেকে আর্থিক এবং সামাজিকভাবে মারাত্মক দৈন্যদশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছেন। দেশের অনুন্নত এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এ সব কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতি ধ্বসে পড়েছে।  

ব্রিটিশ আমেরিকান মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটি সুপরিকল্পিতভাবে দেশীয় মালিকানাধীন সিগারেট কোম্পানিগুলোর চরম ব্যবসায়িক ক্ষতি করে যাচ্ছে। সরকারের সব মহলে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য আবেদন নিবেদন করেও এই শিল্পকে বাঁচানো যাচ্ছে না। বিএটিবি তাদের অদৃশ্য হাতের ইশারায় অনেককে তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য কাজে লাগাচ্ছে। ফলে এ খাত থেকে চলতি বছরে প্রত্যাশিত রাজস্ব আহরণ নাও হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।