ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কৃষিশিল্পের ওপর করপোরেট ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৮
কৃষিশিল্পের ওপর করপোরেট ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব

ঢাকা: আগামী বাজেটে বাৎসরিক টার্নওভারের ওপর আয়কর সম্পূর্ণ অব্যাহতি, কৃষিশিল্পের ওপর আরোপিত করপোরেট ট্যাক্স এবং কিছুক্ষেত্রে ভ্যাট কমানো, কিছুক্ষেত্রে প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা।

রোববার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় কৃষি, গ্যাস, খাদ্য ও পানীয় পণ্যের ব্যবসায়ীরা দাবিগুলো তুলে ধরেন। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ায় সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এনবিআর’র সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেমিক্যাল, পেইন্ট ভার্নিস, চামড়া এবং জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা।

সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বালাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ভাইস প্রেসিডেন্ট নাছির খান বলেন, আমরা বছরে যা ব্যবসা করি, অনেক সময় তার চেয়ে বেশি হারে টার্নওভার ট্যাক্স দিতে হয়। বর্তমানে আমাদের ওপর দশমিক ৬ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হয়। আগামী বাজেটে বাৎসরিক টার্নওভারের ওপর আয়কর সম্পূর্ণ অব্যাহতি চাইছি।

তিনি বলেন, কৃষিশিল্পে বর্তমানে ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স আরোপিত রয়েছে। এটা থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়াও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

সংগঠনের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, কৃষিশিল্পের যেসব পণ্যের উপর ট্যারিফ রয়েছে সেইগুলোর ভ্যাট শূন্য করা। অন্যদিকে যে পণ্যগুলোতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে সেগুলোতে ট্যারিফ ভ্যাট নির্ধারণ করা। এবং ঘি’র উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়াও দেশী সব মৌসুমি ফল, উৎপাদিত জুসের উপর থেকে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি এবং শুল্কমুক্ত দেশীয় কাঁচামাল থেকে উৎপাদিত পণ্য-ফ্লেভার্ড মিল্ক, চানাচুর, ডালভাজা, বাদাম ভাজার মতোই বিস্কুটের ক্ষেত্রে ভ্যাট ধার্য করার দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আজাদ বলেন, মশার কয়েল, অ্যারোসল রিপিলেন্টের উপর থেকে কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার পাশাপাশি সাবসিডারি ডিউটি ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্ত‍াব করছি।

এছাড়াও কীটনাশনক, ছত্রাকনাশক এবং আগাছানাশকের উপর আরোপিত ৫ শতাংশ হারে যে কাস্টমস ডিউটি রয়েছে, তা সম্পূর্ণরুপে প্রত্যাহারের প্রস্তাব জানানো হয়।

বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএ) সভাপতি এম আনিস উদ-দৌলা তরমুজ এবং ধনিয়া বীজের আমদানির ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ৫ শতাংশ ট্যাক্স সম্পূর্ণ মওকুফের দাবি জানান। একইসঙ্গে প্যাকেটজাত আড়াই কেজি মিলেন্ট সিডের (ঘাস বীজ) ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।  

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কৃষিভিত্তিক হিমাগার শিল্পের আয়কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কৃষিভিত্তিক হিমাগার শিল্পের বিদ্যুৎ বিলের ২০ শতাংশ রেয়াত এবং গৃহকরের নামে যে হোল্ডিং ট্যাক্স রাখা হয়েছে তা প্রত্যাহার করা।  
 
তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সবার কথা শুনেছি। আমার ইচ্ছা ছিলো সবার সব বিষয়গুলো দেখা। কিন্তু সরকারের রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেটাও পূরণ করতে হবে। তাই যথেষ্ট চেষ্টা থাকার পরেও হয়তো সবার দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে আসছে বাজেটে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৮
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।