ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দামে বেশি হলেও দেশি গরুতে আগ্রহ ক্রেতাদের

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
দামে বেশি হলেও দেশি গরুতে আগ্রহ ক্রেতাদের চলছে গরু বিকিকিনি। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টা। পরশুরাম উপজেলা পরিষদের পাশের পশুর হাটটি তখন সরগরম। ঈদের আরও ছয়দিন বাকি থাকলেও হাটটিতে বেশ হাঁক-ডাক দিয়ে চলছিল বিকিকিনি। 

হাটে দেশীয় গরু-ছাগল, মহিষের পাশাপাশি ভারতীয় গরুও চোখে পড়ল। তবে বাজার ঘুরে দেখা গেল, দাম খানিকটা বেশি হলেও ক্রেতাদের আগ্রহ দেশীয় গরুতেই।

ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা সীমান্তবর্তী হওয়ায় এ জেলার বিভিন্ন পশুহাটগুলোতে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।

সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় ভারতীয় গরু কম আসায় কোরবানির ঈদে ক্রেতারা দেশি গরুতেই আগ্রহী। কিন্তু দেশি গরুর দাম বেশ চড়া থাকায় অনেক ক্রেতা কিছুটা নাখোশ। ফেনীর কয়েকটি পশুহাট ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় ফেনীর হাটগুলোতে আগে প্রচুর ভারতীয় গরু আসতো। এবার গরু কম আসার সুযোগ দেশীয় খামারী ও কৃষকরা দেশি গরুর অনেক চড়া দাম হাঁকছেন। ফলে হাটে ক্রেতা সমাগম থাকলেও বেচাকেনা জমে ওঠেনি।

ঈদের ছয়দিন বাকি থাকলেও জমে উঠতে শুরু করেছে ফেনী সদরের সিও অফিস, বিরলী, পাঁচগাছিয়া বাজার, পুরাতন রানীর হাটের মজিদ মিয়ার বাজার, মালেক মিয়ার বাজার, মোহাম্মদ আলী বাজার, ফাজিলপুর, কাদেরী হাই স্কুল বাজার, হাজী ওসমানগনি বাজার, নতুন মুহুরীগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন পশুহাট। চলছে গরু বিকিকিনি।  ছবি: বাংলানিউজক্রেতারা জানান, ভারতীয় গরু কম আসায় দেশি গরুর দাম, চাহিদাও বেশি। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার  মাঝামাঝি আকারের দেশি গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

পরশুরাম উপজেলার পাশে অবস্থিত পুরাতন মুন্সীর হাটে গরু কিনতে আসা জসিম উদ্দিন জানান, গত বছর যে গরু ৬০ হাজার টাকায় কিনেছেন, এবার একই আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৮০ হাজারেরও বেশি।

হাটে মনতলা এলাকা থেকে আবদুল আলীম নামে এক কৃষক নিয়ে এসেছেন তার একটি দেশীয় জাতের বলদ গরু। তিনি ছোট সাইজের গরুটির দাম হাঁকিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। আবদুল আলীম জানান, গরু লালন পালন করতে অনেক খরচ। কম দামে বিক্রি করলে পোষায়না।  
ফেনী সদর উপজেলার সিও কাযালয় হাটে গিয়ে দেখা যায় কেনাবেচার চাইতে দরদাম হচ্ছে বেশি। এদিন এ বাজারে বিক্রি হয়েছে অল্প কয়েকটি গরু।

আশফাক নামে এক ক্রেতার অভিযোগ, হাটে প্রচুর গরু উঠলেও বিক্রেতারা উচ্চমূল্য হাঁকার কারণে বিক্রি হচ্ছে না। তবে একেবারে শেষ সময়ে এসে কম দামে গরু কেনার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কয়েক ক্রেতা।

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন বাংলানিউজকে জানান, ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে স্বাচ্ছন্দে বেচাকেনা করতে পারেন সে জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সাধারণ ক্রেতারা আশা করছেন, ঈদ যতো ঘনিয়ে আসবে গরুর দাম কমে আসবে।  

স্থানীয় খামারীরা বলছেন, সীমান্তে কঠোর নজরদারি করলে ঢুকতে পারবেনা ভারতীয় গরু। ন্যায্য দাম পাবে খামারীরা। আর যদি ভারতীয় গরু ব্যাপক হারে ঢুকে পড়ে তাহলে লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে তাদের।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮ 
এসএইচডি/এসআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।