ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সবজির বাজারে ওঠানামা, মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
সবজির বাজারে ওঠানামা, মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল সবজির বাজারে ওঠানামা, মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল-ছবি-জি এম মুজিবুর

ঢাকা: রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দাম ওঠানামা করছে। সবজির বাজারে কোনটার দাম কিছুটা কমেছে, আবার কোনটার কিছুটা বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাছ-মাংসের দাম।

শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১, ১০, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বউবাজার এলাকা ঘুরে জানা গেছে এ তথ্য। বাজারে চলতি মাসের শুরু থেকেই দাম স্থিতিশীল ছিল।

এ সপ্তাহে এসে দামের ওঠানামা লক্ষ করা গেছে।  

সবজির পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, বাজারে সবজির চালান ভালো। শীতের সবজির বাজার ভরপুর থাকায় দাম আরও কমতে পারে। তবে হাতেগোনা কয়েকটি সবজির চালান কম থাকায় সেগুলোর দাম বেড়েছে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিরপুর-১ এর পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, নির্বাচনের কথা চিন্তা করে বেশিরভাগ সবজির আড়তদাররা এখন মজুদ শুরু করেছে। তারা কম দামে পাচ্ছে। তবে সব সবজি আবার মজুদ করা যায় না। এ কারণে সেগুলোর দাম পড়ে যাচ্ছে। আর কৃষকদের কাছ থেকে আনা দামের সঙ্গে পাইকারি দামের পার্থক্য অনেক বেড়েছে। অর্থাৎ কৃষকরা আগের চেয়ে অনেক কম দামে সবজি বেচতে বাধ্য হচ্ছে চালানকারীদের কারণে।  

শুক্রবার বাজারগুলোতে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা টমেটোর দাম কমেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজরের দাম কমেছে ১০ টাকা, ১০ টাকা বেড়েছে ঢেঁড়সে, ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম কমেছে মূলায়, ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বেগুনে, করলায় দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি গাজর ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০, মূলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, কাকরোল ৩৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

আবার লাউয়ের দাম কমেছে ১০ টাকা।

প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় এবং জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আঁটি কলমি শাক, লাল শাক ৬ থেকে ১০ টাকা, লাউ শাক ২০ থেকে ২৫ টাকায়, পালং শাক,  পুঁই শাক ১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।  

সকালে মিরপুর-১০, শেওড়াপাড়া  এলাকায় বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত শামীম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দাম আরও কমবে বলে জানতে পেরেছি। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কম। শুধু নতুন আলুর দামটা বেশি। বাজারে যে নির্বাচনী হাওয়া লাগছে না এ জন্য আসলে সরকারকে ধন্যবাদ দিতে হয়। শুক্রবার, শনিবার বা সরকারি ছুটির দিন বাজারে সব সবজির দাম ৫ টাকার মতো বেশি থাকে সপ্তাহের অন্যদিনের চেয়ে।  

এদিকে প্রতি কেজি সিরাজ মিনিকেট ও মিনিকেট চাল ৫৭ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। স্বর্ণ চাল ৩৮, মোটা চাল ৩৫, সাকি-২৮ ৪৪, আমিন-২৮ ৪০ প্রতি কেজি মসুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকা, মসুর ডাল মোটা ৭০ টাকায়, মুগ ডাল ১২০ টাকায়, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার খোলা ৯০ টাকায় ও  বোতলজাত ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

আবার চওড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে আসা মৌসুমের নতুন আলু। কেজি প্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।  আদার দাম আবার ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। রসুনের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। বর্তমানে প্রতি কেজি আদা ১৪০ টাকায়, রসুন ভারতীয় প্রতি কেজি ৫০ টাকায় ও দেশি রসুন ৪০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৪০ টাকা, ভারতীয় ৩০ টাকা এবং পুরানো  আলু ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে আগারগাঁও কাঁচাবাজার এলাকার খুচরা বিক্রেতা জসিম বাংলানিউজকে জানান, নতুন আলু গত সপ্তাহে বাজারে ঢুকেছে। তখন দাম আরও বেশি ছিল। শুরুতে ১২০ টাকা কেজি পর্যন্ত দাম ছিল। এখন অনেক কমেছে। এই অবস্থায় আরও অনেকদিন থাকবে।  তারপর দাম কমতে পারে। তবে আলুর চালান ভালো। এবার আলুর ফলনও ভালো হয়েছে। পাইকারি বাজারে অনেক আলু নষ্ট হতেও দেখেছি।  

তবে আলুর দামের আধিক্যের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না ক্রেতাদের কাছে। বউবাজার এলাকায় বাজার করতে আসা রফিক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে চালান বেশি তারপরও আলুর দাম বেশি। বউবাজারে মিরপুরের অন্য এলাকার তুলনায় একটু কম দামে জিনিসপত্র কেনা যায়। তারপরও এখানে নতুন আলুর কেজি ৮০ টাকা। অন্য জায়গায় ৯০ টাকা। এটা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি বলে আমার মনে হয়।  

এদিকে সবজির বাজারে ওঠানামা থাকলেও মাছ-মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে ক্রেতা বুঝে দাম হাকিয়ে দিচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে মাছের বাজারে। বাজারভেদে কোথাও কোথাও মাছে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি প্রতি দাম বাড়তে দেখা গেছে।  

তবে মাছ ব্যবসায়ীদের মতে, মাছের দাম সবচেয়ে বেশি ওঠানামা করে। কিন্তু এ মাসের শুরু থেকে দাম একই। বাজারে  ক্রেতাদের এখন সম্পূর্ণ নজর সবজির দিকে। যে কারণে অনেক ব্যবসায়ী কম দামে মাছ বিক্রি করছে।  

বাজারে প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের হালি ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি জোড়া ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে মাছের আকারভেদে প্রতি কেজি ট্যাংরা মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কৈ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, নলা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

আর প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়, গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
এমএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।