ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশের অর্থনীতি ভালো হলেও ঝুঁকি রয়েছে ব্যাংক খাতে 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৮
দেশের অর্থনীতি ভালো হলেও ঝুঁকি রয়েছে ব্যাংক খাতে 

ঢাকা: খেলাপি ঋণ, মূলধন ও মুনাফার নিম্নমুখিতায় আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতে নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস। 

সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে দেশের অর্থনীতি অনেক ভালো করলেও ব্যাংক খাতের অবস্থা একেবারেই নাজুক। ফলে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে ভবিষ্যতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

যদিও ব্যাংকিং খাতে প্রচুর অর্থ রয়েছে এবং সরকারের সহযোগিতাও অব্যাহত রয়েছে।

সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে সংস্থাটি বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ওপর পূর্বাভাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। আর্থিক খাতের এই গবেষণা সংস্থাটি টানা তৃতীয়বারের মতো ‘ব্যাংকিং সিস্টেম আউটলুক বাংলাদেশি ব্যাংকস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ঋণমান প্রকাশ করে। দেশের ব্যাংকগুলোর ছয়টি সূচক পর্যালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছে মুডিস।

মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ঋণমান স্থিতিশীল। খাতটিতে কাজ করার পরিবেশও স্বাভাবিক। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তেজিভাব থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক খাত দুর্বল অবস্থায়। এর অন্যতম কারণ সম্পদের গুণগত মানের চরম অবনতি। সম্পদের মানের এ অবস্থা চলতে থাকলে ঋণ খরচ বেড়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের মুনাফা কমবে। ফলে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ব্যাংক খাতের দুরবস্থা স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ পাবে।

প্রসঙ্গ, যে প্রধান ছয়টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে মুডিস এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে তা হচ্ছে- ব্যাংক পরিচালনার পরিবেশ, সম্পদ ঝুঁকি, মূলধন, মুনাফা ও দক্ষতা, অর্থায়ন ও তারল্য এবং সরকারি সহায়তা। এর মধ্যে ব্যাংক পরিচালনার পরিবেশ, অর্থায়ন ও তারল্য এবং সরকারি সহায়তা সূচককে ‘স্থিতিশীল’ বলে উল্লেখ করেছে মুডিস। আর সম্পদ ঝুঁকি, মূলধন এবং মুনাফা ও দক্ষতা সূচককে ‘অবনতিশীল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  

মুডিসের বিশেষজ্ঞ টেংফু লি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি হবে। এর কারণ দেশটির তৈরি পোশাকশিল্পের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা। এছাড়া স্থিতিশীল ঋণ প্রবৃদ্ধি ও অন্তর্মুখী রেমিট্যান্স অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করছে। তবে ব্যাংক খাতের সম্পদের মান খুবই খারাপ হওয়ায় বেশ ঝুঁকিও রয়েছে। করপোরেট সুশাসনের ঘাটতির ফলে ব্যাংক খাত তথা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সম্পদের অবস্থা খুবই খারাপ।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকে সুশাসনের অভাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ গেল জুন মাসে ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ প্রেক্ষিতে আগামী দেড় বছরের অবস্থা পর্যালোচনা করে মুডিস আভাস দিচ্ছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে ঝুঁকির পরিমাণ বাড়বে। খেলাপি ঋণের কারণে সুদের হার যেমন বাড়বে, অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতে কমবে মুনাফার হার।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নিতে চাইলে সক্ষমতার বিষয়টি কোনো দেশের ঋণমান নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়। আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলো এই ঋণমান প্রকাশ করে। ঋণমান দেখে বোঝা যায় ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কেমন। ঋণমান কমে গেলে অর্থ পরিশোধ নিয়ে শঙ্কায় ভোগেন ঋণদাতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৮
জিসিজি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।