ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনা হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৯
যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনা হবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে নিজ কক্ষে শেষবারের মতো যান মুস্তফা কামাল

ঢাকা: যারা কর দেবার যোগ্য তাদের সবাইকে করের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় রাজস্ব বৃদ্ধি করতে হবে। কারা কর দিতে পারবেন, কারা পারবেন না এটা নির্ধারণ করা জরুরি।

মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) শেরেবাংলা নগরে শেষবারের মতো পরিকল্পনা মন্ত্রীর কক্ষে এসে অর্থমন্ত্রীর নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মুস্তফা কামাল।

রাজস্ব আহরণ প্রসঙ্গে নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা করের রেট বাড়াতে চাই না।

মানুষকে আহত করে কষ্ট দিয়ে কর আহরণ করার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমাদের ট্যাক্স জিডিপি সূচক অনেক কম। এই অঞ্চলে আমরা পিছিয়ে আছি। জাতীয় আর্থিক খাতের অন্যতম খাত রাজস্ব আহরণ। রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। এটা বৃদ্ধির জন্য কর বা ইনকাম ট্যাক্স দিতে হবে। যাদের ব্যক্তিগত আয় করেন তাদের ট্যাক্স দিতে হবে, যারা কর্পোরেট ব্যবসা করেন তারা কর্পোরেট ট্যাক্স দেবেন। যাদের ট্যাক্স দেয়ার দরকার তাদের সবাইকে করের আওতায় আনা হবে।

মুস্তফা কামাল আরো বলেন, রাজস্ব আহরণের বিষয়ে আমি দ্রুত এই কাজটা করে ফেলবো। এই বিষয়ে সবার সঙ্গে বসবো। কোন খাতে কত রেট করলে ম্যাক্সিমাম রেভিনিউ অর্জন করতে পারবো, সেই বিষয়ে কাজ করবো। যারা ট্যাক্স দেবেন তাদের ক্ষতিগ্রস্ত না করেই ট্যাক্স আদায় করবো। কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ট্যাক্স আদায় করবো না। এটাই হবে মঙ্গলজনক কাজ। একদিকে আমাদের ট্যাক্স আহরণ করতে হবে, অন্যদিকে করের হার কমাতে হবে। যদি করের হার কমিয়ে  বেশি রাজস্ব আহরণ করি তবে আমরা সেই কাজটাই করবো। আমার মূল লক্ষ্য হবে উন্নয়ন করা।

দেশের আর্থিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রীর মতো করে আমরা সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একসঙ্গে কাজ করবো। আমি মনে করি দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে। সঠিক পথে যদি না থাকে তবে এত অর্জন কোথা থেকে এসেছে? কিছু কিছু মানুষ অর্থনীতি নিয়ে নেতিবাচক কথা বলে, এটা সঠিক না।

তিনি বলেন, আমি সবসময় আশাবাদী মানুষ, আমি সবসময় স্বপ্ন দেখি। সবার উচিত স্বপ্ন দেখা। স্বপ্ন দেখা খারাপ কিছু নয়, স্বপ্ন দেখতে পয়সা খরচ হয় না। আমি মানুষকে বিশ্বাসের জায়গায় নিতে চাই। যদি বিশ্বাসের জায়গায় নিতে পারি তাহলে কাজগুলো করা সহজ হবে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, কিছু কিছু অবকাঠামো দেখা যায়। যেমন- আমাদের নদীবন্দর হবে, রাস্তাঘাট হবে। কিছু কিছু অবকাঠামো দেখা যায় না, সেটাই হচ্ছে শক্তিশালী অবকাঠামো। আমার মতে সেই অবকাঠামো হচ্ছে বিশ্বাস। আমাদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে যে, আমরা পারবো।

আর্থিক খাত প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালো, শক্তিশালী। তবে আর্থিক খাতের কিছু সমস্যা আছে। আমাদের আর্থিক খাত খারাপ। তবে পত্র-পত্রিকায় যতটা খারাপ লেখা হয় সেই পরিমাণে খারাপ না। আমার বিশ্বাস আর্থিক খাত অত খারাপ না। দেশের আর্থিক খাত যদি অতই খারাপ হবে, দেশের ব্যাংকিং খাত অতই খারাপ হবে, তাহলে দেশের অগ্রগতি আসলো কোথা থেকে? তাহলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিভাবে হয়? আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি  দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে। আমার বিশ্বাস কিছুটা ব্যত্যয় থাকতে পারে তবে যতটা শুনি ততটা না।

সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, সব থেকে সহজ উপায় কাজ করা। আমরা যে জায়গায় আছি সেখান থেকে কাজ করবো। দেশের সকল বিষয় এগিয়ে নেবো।

পুরাতন আইন সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কিছু কিছু জায়গায় দীর্ঘদিন হাত দেয়নি। সেই সব জায়গায় সংশোধন করার সময় এসেছে। অনেক আইন আছে ১৬০০ সালের আইন। এই আইনগুলো কতটা যৌক্তিক আমাদের দেখতে হবে।

আগাম বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা বাজেট দেবো। বাজেট কিন্তু শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব না। আমরা আমাদের অবস্থা বিবেচনা করেই বাজেট দেবো। বাজেট কিন্তু একটা বছরের নয়, বাজেটের সঙ্গে জড়িত সপ্তম-পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। আমরা মানুষের কল্যাণে বাজেট তৈরি করবো। অর্থনৈতিক চাহিদা বিবেচনা করেই বাজেট তৈরি করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৯
এমআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।