ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এডিপি বাস্তবায়নে ১৪ মন্ত্রণালয়-বিভাগে বেহালদশা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯
এডিপি বাস্তবায়নে ১৪ মন্ত্রণালয়-বিভাগে বেহালদশা

ঢাকা: দেশের উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে শতভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের (জুলাই-জানুয়ারি) সাত মাসে ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এডিপি ২০ শতাংশও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে সংশ্লষ্টরা বলছেন, ভূমি অধিগ্রহণ ও বৈদেশিক ঋণ পেতে দেরি হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি হয়েছে।

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) শেরে-বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।


 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছিলো সরকার। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ সময়ে ৬২ হাজার ২৮২ কোটি টাকা বাং ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ খরচ হয়েছে। গত বছর এ হার ছিল ৩৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
 
অথচ ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হার ২০ শতাংশের কম। যেমন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে ১৪ দশমিক ৭৭, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ১৯ দশমিক ৫৯, অর্থ বিভাগে ১৪ দশমিক ২৪, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে ১৬ দশমিক ৬৭, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ১৪ দশমিক ৯০ এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ে ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে।
 
কিছু কিছু মন্ত্রণালয়-বিভাগ আবার ১০ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যেমন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ১ দশমিক ৪৬, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ৩ দশমিক ৪১, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ২ দশমিক ১৬, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৯ দশমিক ৭৫, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ০ দশমিক ৫৯, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ৭ দশমিক ৪১ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হার মাত্র ০ শতাংশ।
   
অন্যদিকে এডিপি বাস্তবায়নে এগিয়ে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (এডিপি বাস্তবায়ন ৭৩ দশমিক ৬২ শতাংশ), আইএমইডি (৬৭ দশমিক ১৮ শতাংশ), সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় (৬৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ), জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় (৬২ দশমিক ২৫ শতাংশ), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (৫৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ), অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) (৫৩ দশমিক ১৯ শতাংশ) এবং বিদ্যুৎ বিভাগ (৫২ দশমিক ৭৫ শতাংশ)।
 
অন্যদিকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এগিয়ে আছে বিদ্যুৎ বিভাগ ৫১ শথাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৭ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় ৫৯ শতাংশ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৪১ শতাংশ।
 
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রাপ্ত ১০ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে জিওবি থেকে ৮২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা বৈদেশিক অংশ থেকে ৪৭ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন হিসেবে ২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। কিন্তু জানুয়ারি মাস শেষে এ বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছে ৪৭ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, হিসেবে যা ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, বৈদেশিক অংশ থেকে ১৮ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৯২৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
 
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রাপ্ত ১০ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে জিওবি থেকে ৮২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা বৈদেশিক অংশ থেকে ৪৭ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন হিসেবে ২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। কিন্তু জানুয়ারি মাস শেষে এ বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছে ৪৭ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, হিসেবে যা ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, বৈদেশিক অংশ থেকে ১৮ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৯২৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।  
 
এডিপি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে এডিপি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নাই। এডিপি বাস্তবায়ন যতো বাড়াতে পারবো দেশের উন্নয়ন ততোই দৃশ্যমান হবে। আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করেছি কিভাবে এডিপি বাস্তবায়ন গতি বাড়ানো যায়। ’
 
মন্ত্রী আরো বলেন, কিছু কিছু মন্ত্রণালয়-বিভাগ এডিপি বাস্তবায়নে ভালো করেছে। কিছু কিছু আবার খারাপ করেছে। শতভাগ এডিপি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯
এমআইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।