ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডলারের বিপরীতে দুর্বল হচ্ছে টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
ডলারের বিপরীতে দুর্বল হচ্ছে টাকা ডলার/ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আমদানি ব্যয় বাড়ায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে টাকা। রপ্তানির তুলনায় আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে ডলার ঘাটতিতে চাপের মুখে পড়বে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে প্রতি এক ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় মূল্য ছিল ৮৪ টাকা ১২ পয়সা। এক বছর আগে এক ডলার কিনতে ব্যয় হতো ৮২ টাকা ৯২ পয়সা।

 
 
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সাউথ এশিয়ার সামষ্টিক অর্থনীতি গবেষণা বিভাগের বিশ্লেষক সৌরভ আনন্দ বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫শ ৭০ কোটি ডলারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিদেশি ঋণ নিয়েছে। আগের বছরের ঋণের পরিমাণ ছিল ৩শ ২০ কোটি ডলার।  
 
সম্প্রতি গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিং: গ্লোবাল আউটলুক- ‘২০১৯ বর্তমান যুদ্ধ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ডলারের দাম ক্রমশ বাড়ায় এটি বিনিময় হারের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিদেশে আমদানি ব্যয় পরিশোধের স্থিতি ৫১৩ মিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৫৪ মিলিয়ন ডলার।  
 
স্ট্যানচার্টের গ্লোবাল রিসার্চ টিমের আসিয়ান ও সাউথ-এশিয়া এফএক্স গবেষণা বিভাগের প্রধান দেব্য দেভেশ্বর বলেন, অবকাঠামোগত প্রকল্পের চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি আমদানি আরও বাড়বে।  
 
তিনি বলেন, আমদানি ব্যয় পরিশোধের তুলনায় রপ্তানি আয় কম হওয়ার কারণে একটি ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যদিও কিছুটা ঘাটতি দূর করেছে রেমিটেন্সে আয়।
 
দেভেশ্বর আরও বলেন, এ সমস্যা কমাতে বাংলাদেশকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে এবং পরিশোধ ঘাটতি কমানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে হবে।
 
চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ যা সরকারের ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিশ্ব মন্দা ও সংসদ নির্বাচনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা স্থবির হওয়ার কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেনি।  
 
জিডিপির টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বজায় রাখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।  
 
খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার জন্য ব্যাংকিং সেক্টরে করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানান।  
 
তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির জন্য বেশি সুদে ঋণ বিতরণও দায়ী। এই সমস্যা সমাধানে আমানত সংগ্রহের উপর জোর দেওয়া উচিত।
 
যদিও ২০১৮ সালে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশ।  
 
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের গ্লোবাল মুখ্য অর্থনীতিবিদ ডেভিড মান বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক চীনা বিনিয়োগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান বাণিজ্য সমস্যার কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে লাভবান হবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো।  
 
তারপরেও তিনি মানবাধিকার, শারীরিক অবকাঠামো ও ব্যবসার পরিবেশকে আরও গতিশীল করার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।