শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) সকালে শিল্পকলা একাডেমিতে আর্থিকখাতের বর্তমান পরিস্থিতি ও মানোন্নয়নে করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনলাইন সংবাদমাধ্যম অর্থসূচক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউসিবি ক্যাপিটাল লিমিটেডের রিসার্চ টিমের রাজীব।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তারল্য সমস্যা মাঝে মধ্যেই দেখা দেয়। ডিপোজিট কমে যাচ্ছে, অ্যাডভান্স বেড়ে যাচ্ছে। এটি ঠিক হয়ে যাবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক নির্ভরতা কমাতে হবে। তাই লংটার্ম বিনিয়োগ সংগ্রহের জন্য পুঁজিবাজার ডেভেলপ করতে হবে। শুধু তাই নয় বন্ড মার্কেটককে ডেভেলপ এবং করপোরেট বন্ড ইস্যু করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বন্ড মার্কেট ডেভেলপে সরকার একটি কমিটি করেছে। এর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। বন্ড মার্কেটে কিছু বন্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে বিশেষ করে করপোরেট বন্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায় এনবিআর’র করের চাপ। এটি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তিনি একমত হয়েছেন বন্ড যদি তৈরি না হয় তাহলে ট্যাক্স আদায় হবে কি করে।
সভাপতির বক্তব্যে ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত যে পরিমাণের অবদান রাখছে তা সত্যি অনস্বীকার্য। সেই পরিমাণ স্বীকৃতি আমরা তাদের দেই না, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, ব্যাংকিংখাত নিয়ে আমরা যা ভাবছি, যা বলছি, তার চেয়ে অনেক বেশি অবদান রাখছে। কয়েকটি ভুল ধারণা, অনেকে বলছেন ব্যাংকের সংখ্যা বেশি এই কথাটা এতো অর্থহীন যে, এটা সরকারের ভেতরের কেউ কেউ বলেন।
সাবেক গভর্নর বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংকের শাখা বেশি কিনা সেটি দেখেন। বাংলাদেশের একটি ব্যাংক যে পরিমাণ লোককে সেবা দেয় সেটি ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার চেয়ে অনেক কম। শুধু কম না অনেক কম, তাই ব্যাংকের সংখ্যা দিয়ে কিছু হয় না।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল আসে মুদ্রা তহবিল থেকে, বিমা খাত থেকে। ব্যাংকখাত থেকে লংটার্ম প্রজেক্টে বিনিয়োগ বাংলাদেশ ছাড়া কোথাও নেই। তবে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশেও এই ধারাই ছিল। ৯২-৯৩ সালে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পরার্মশে সরকার একটি বড় ধরনের আইন আনলো। সেটি হলো বাণিজ্যিক ব্যাংককে বাধ্য করা হলো লংটার্ম বিনিয়োগে।
তিনি বন্ড মার্কেট বড় করা, বিমা ফান্ড অলস পড়ে না থেকে বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের সঙ্গে নিয়ে আসার তাগিদ দেন।
তিনি আরো বলেন, অনেকে বলছেন প্রাইভেট ব্যাংক ভালো করছে সেটি সেবার ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের প্রাণ কৃষি, এক্ষেত্রে কয়টি প্রাইভেট ব্যাংক লোন দিয়েছে, কোনো এনজিও লোন দিয়েছে শুনেছেন। অথচ সোনালী বা অগ্রণীর কাছে এরকম অসংখ্য আছে। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যদি ব্যাংকিং হয় তাহলে ব্যাংকের মতো করে সেবা দিতে হবে।
সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে সাবেক এ গভর্নর বলেন, এখানে যে অপচয় হয় সেটিও বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫,২০১৯
এসএমএকে/জেডএস


