ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৈশাখের আগে বরিশালের বাজারে কমছে ইলিশের দাম

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
বৈশাখের আগে বরিশালের বাজারে কমছে ইলিশের দাম ইলিশ বিক্রি করছেন একজন মাছ বিক্রেতা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: আমদানি না বাড়লেও গত কয়েকদিন ধরে বরিশালের বাজারে কমছে ইলিশের দাম। পাশাপাশি বৈশাখের আগে দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

তবে নিষেধাজ্ঞার আগের দরের চেয়ে এখনো বাজারে ইলিশের দর বেশি বলেই মনে করছেন ক্রেতারা।

বরিশাল পোর্টরোডের রসুলপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে অন্য মাছের সঙ্গে ইলিশের দেখাও মিলেছে।

যার মধ্যে মাঝারি আকারের ইলিশের পরিমাণই একটু বেশি। আবার এসব ইলিশ কিনতে খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি পাইকাররাও রয়েছেন। অল্প কিছু শ্রমিক ইলিশের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও কর্মযজ্ঞের সচলতার ছাপ নেই অবতরণ কেন্দ্রে।

খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি চলছে পাইকারদের মাধ্যমে দূর-দূরান্তে ইলিশ পাঠানোর প্রস্তুতিও। এজন্য হাতেগোনা কয়েকটি বরফ ভাঙার কল চালু থাকলেও বেশিরভাগই নিস্তব্দতার মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। ইলিশের বাজার।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে মোকামে ওঠা ভালো আকারের ইলিশগুলো পাইকাররা কিনে ককশিটে বরফ দিয়ে প্যাকেটজাত করিয়ে নিচ্ছেন। যার বেশিরভাগই ঢাকায় যাবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। কারণ হিসেবে তারা জানান, নববর্ষ উৎসবে ঢাকায় ইলিশের চাহিদা আকাশচুম্বি। তাই মূল্যও পাওয়া যায় অনেক বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে পাইকারি বাজরে মণপ্রতি কেজি ওজনের ইলিশ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১ কেজি ২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকায় এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায়।

অপরদিকে কেজির নিচের ৬ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণপ্রতি ৫০ হাজার টাকায়, ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৮ থেকে ৩০ হাজার এবং সবচেয়ে ছোট গোটলা ইলিশ ১৮ হাজার টাকায় মণ বিক্রি হচ্ছে।

আড়তদার মো. নাছির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন ধরে ইলিশের বাজারে দরের বেশ পতন ঘটছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে স্বাভাবিক দিনের মতো দেড় দুইশ’ মণ ইলিশ না উঠলেও যা আসছে তাতে প্রতিদিন দর কমছে। কোনো কোনোদিন আকার অনুযায়ী ইলিশের দর মণপ্রতি ২ হাজার টাকা বা তার বেশিও কমছে।

এদিকে বৈশাখকে কেন্দ্র করে পাইকাররা আগে থেকেই ইলিশ সংরক্ষণ করায় পোর্ট রোডের মোকামে দর কমে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তাদের মতে, বৈশাখের আগে দর আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। আর বৈশাখের পর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে যাওয়ায় ইলিশের আমদানি বেড়ে দর আরো কমে যাবে।

অপরদিকে ক্রেতাদের দাবি নিষেধাজ্ঞার আগে থেকে বাজারে ইলিশের দর এখনো বেশি রয়েছে। বর্তমানে কেজি সাইজের যে ইলিশ মণপ্রতি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে তা নিষেধাজ্ঞার আগে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। তেমনি নিষেধাজ্ঞার আগে বর্তমান বাজারের তুলনায় আকার অনুযায়ী মণপ্রতি ইলিশের দর ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কম ছিলো বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। দরের এ তারতম্যের কারণ হিসেবে ইলিশের আমদানিকে দায়ী করছেন অনেকে।

পোর্ট রোডের আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিৎ কুমার দাস জানান, স্বাভাবিক দিনের থেকে ইলিশের আমদানি কম রয়েছে। এখন কোনোদিন ৪০-৫০ মণ, আবার কোনোদিন ৬০-৭০ মণ ইলিশ আসে এখানে। এসব ইলিশ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরের নদী থেকে আহরণ করা হয়।

বরিশাল জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস জানান, অভয়াশ্রমগুলোতে জেলেরা মাছ শিকার করতে না পারায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। তবে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাজারে ইলিশ সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।