তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর অন্যতম এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি কঠিন কাজ। লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, উষ্ণতা বৃদ্ধি, বন্যাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গত দশকে দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দুই শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং কৃষিখাতে জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে চলতি দশকে এ ধরনের ক্ষতির পরিমাণ এক শতাংশে নেমে এসেছে। ’
রোববার (৫ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে কৃষিখাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজিত জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষি উৎপাদনশীল ব্যবস্থা গড়ে তোলা শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাপান ভিত্তিক এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এপিও) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের পরিচালক এস এম আশরাফুজ্জামান এবং এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের কৃষিবিষয়ক প্রোগ্রাম কর্মকর্তা ড. শেখ তানভির হোসেন বক্তব্য রাখেন।
শিল্প সচিব বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে জাতীয় উন্নয়নের জন্য বড় হুমকি বিবেচনা করে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ নীতি প্রণয়ন করেছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ২০০৫ সালে ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন দাখিল করেছে। ২০০৯ সালে এটি আরও সমৃদ্ধ করে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত ইস্যুগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিকারের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকার প্রণীত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদনের লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট সম্পৃক্ত উল্লেখ করে আবদুল হালিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সহশ্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃষিখাতে এসডিজির নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে অগ্রাধিকার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর কৃষি উৎপাদন এবং জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় গৃহীত উদ্যোগের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো লাভবান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, পাঁচ দিনব্যাপী এ কর্মশালায় বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১১টি দেশের ১৯ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং দেশি-বিদেশি ছয়জন কৃষি উৎপাদনশীলতা বিশেষজ্ঞ অংশ নিচ্ছেন। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি প্রসারের মাধ্যমে উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এর ফলে বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে কৃষিখাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়াস বেগবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৯
জিসিজি/আরবি/