ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অভাব-অভিযোগের মধ্যেই চামড়া কেনা শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
অভাব-অভিযোগের মধ্যেই চামড়া কেনা শুরু

ঢাকা: সরকার ও ট্যানারি মালিকরা মিলে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছেন অনেক আগেই। এরপরও নগদ টাকার অভাবে তা সংগ্রহ করতে পারেনি অনেকেই। আবার অনেকে কেনার পরও লবণের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তা সংরক্ষণে ব্যর্থ হন। ফলে পচে নষ্ট হয়ে যায় হাজারো কাঁচা চামড়া। 

তবে এসব অভাব-অভিযোগের মধ্যেই সোমবার (১৯ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে চামড়া কেনা।  

সোমবার এ নিয়ে রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকার কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বাংলানিউজের।

ট্যানারি মালিকরা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গত দুই দিন চামড়া কেনা হয়নি। তবে আজ থেকে সারা দেশে পুরোদমে চামড়া কেনা চলছে।  সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে বলেই দাবি করেন ট্যানারি মালিকরা।

অন্যদিকে নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা শুরু হলেও আবারও পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় নগদ মূল্যের পাশাপাশি বাকিতেও চামড়া বিক্রি করে দিচ্ছেন আড়তদাররা। এসব বকেয়া কবে নাগাদ পাওয়া যাবে, সেটি তারা নিজেরাও জানেন না।

পোস্তা এলাকার ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যবসা আমাদের বাবা-দাদার রেখে যাওয়া ব্যবসা। আমরা বহু বছর ধরে এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু গত দুই থেকে তিন বছর ধরে ট্যানারি মালিকরা পুরনো বকেয়া পরিশোধ করছেন না। অথচ তারা ঠিকই সরকার ও ব্যাংকের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন।  
‘তাদের কাছে বকেয়া থাকায় অনেকেই এবার চামড়া কিনতে পারেননি, অনেকে আবার সংগ্রহ করার পরও তা সংরক্ষণে ব্যর্থ হন। হঠাৎ লবণের মূল্য বেড়ে দুই গুণ হওয়ায় চামড়াতে পর্যাপ্ত লবণ দেওয়া যায়নি। ফলে নষ্ট হয়ে গেছে হাজারো চামড়া। ’

হাজি দিল জাহান আড়তের মালিক সহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে আমার চার কোটি টাকা বকেয়া আছে। এরপরও ৯০০ চামড়া কিনেছি খুব কষ্টে। কিন্তু চামড়া কেনা হলেও লবণের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় চামড়াতে পর্যাপ্ত লবণ দিতে পারিনি। ফলে ৯০০ চামড়া মধ্যে মাত্র ১০০ চামড়া ভালো ছিলো, বাকি সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

সাজ্জাদ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অনেক টাকা বকেয়া আছে। এরপরও ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে চামড়া কিনেছি। আজ থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। কিছু নগদ আর কিছু বাকিতে বিক্রি করেছি। জানিনা এ বকেয়া কবে নাগাদ পাবো। তবে ট্যানারি মালিকরা সময় মতো টাকা পরিশোধ করলে আমরা ভালো দামে চামড়া সংগ্রহ করতে পারি। এতে কারোরই লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এবারের ঈদুল আজহায় সরকার ও ট্যানারি মালিকরা মিলে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। গত বছরের দাম অনুযায়ীই এ বছরের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়। ২০১৮ সালেও একই দাম ছিল।  

এছাড়া সারা দেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা ও বকরির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকায় সংগ্রহ করতে বলা হয় ব্যবসায়ীদের। তবে ট্যানারি মালিকদের বকেয়ার কারণে নির্ধারিত মূল্যোর চেয়ে কম দামেই চামড়া সংগ্রহ করতে হয় আড়তদারদের।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখায়াত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গত দুই দিন চামড়া কেনা হয়নি। আজ থেকে কেনা শুরু হয়েছে, যা আগামী তিন মাস পর্যন্ত চলবে।  

‘আর বকেয়ার বিষয়টি আগামী ২২ আগস্ট বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে। পুরনো বকেয়া কিভাবে দেওয়া য়ায়, সেটি ওই দিনই ঠিক করা হবে। তবে সব জটিলতা শেষে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামেই আমাদের চামড়া কেনা শুরু হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯ 
ইএআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।