ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিলুপ্তপ্রায় ২১ মাছের জিনপুল সংরক্ষণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিলুপ্তপ্রায় ২১ মাছের জিনপুল সংরক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধনীতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা করে দেশের বিলুপ্তপ্রায় ৬৪ জাতের মাছের মধ্যে ইতোমধ্যে ২১টির জিনপুল সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

তিনি বলেছেন, অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন এবং দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছের পুনরাবির্ভাবের জন্য গবেষণা কার্যক্রম বাড়াতে জোর দিয়েছি আমরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘বার্ষিক গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন ২০১৯-২০’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালা উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খসরু বলেন, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশের বেশি মানুষ মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে দেশের জিডিপির ৩.৫৭ শতাংশ অর্জিত হয় মৎস্য খাত থেকে। ৮০ এর দশকে মাছের উৎপাদন ছিল ৮.০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ছিল নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় ও বিলের মাছ। সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টায় এখন মাছের উৎপাদন ৪২.৭৭ লাখ  মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশ আসে চাষ থেকে, ২৮ শতাংশ নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়সহ অন্যান্য অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় থেকে এবং ১৬ শতাংশ আসে সমুদ্র থেকে।

তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদনে এখন আমরা বিশ্বে প্রথম। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয়। মিঠাপানির মৎস্য উৎপাদনে চতুর্থ। চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম। তেলাপিয়া উৎপাদনেও চতুর্থ অবস্থান অর্জন করেছি বিশ্বে। এ কৃতিত্ব এদেশের সবার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭৩ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে চার হাজার ২৫০ কোটি টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ। অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে ইনস্টিটিউটে দুটি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সিউউড, ওয়েস্টার, শামুক ও ঝিনুকের প্রজনন ও চাষাবাদ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া সামুদ্রিক গবেষণা জোরদার করার লক্ষ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কক্সবাজারের সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গবেষণা জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের মোট কৃষিজ আয়ের ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ যোগান দেয় মৎস্যখাত এবং দেশের প্রাণিজ আমিষের শতকরা ৬০ ভাগ মাছ থেকে আসে বলেও অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়।

বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালা উদ্বোধনীতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফুল আলম।

এতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. কবির ইকরামুল হক, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ রাশেদুল হক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিয়ামুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় ছয়টি টেকনিক্যাল অধিবেশনে ৬৫টি গবেষণা প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। এতে মৎস্যবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য গবেষক, মৎস্যজীবী, মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ মৎস্য সেক্টরের সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজন অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
জিসিজি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।