এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবসহ মোট পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৪ হাজার ২৯৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৮৭ টাকা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২৪তম ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম) পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
‘আমাদের তৃতীয় টার্মিনালের যে কাজটি হচ্ছে সেটি ঠিক মতো শুরু করতে পারিনি। কাজটি শুরু করার জন্য প্রথমে আমরা কিছু এলাকা ধরিনি, বাদ পড়ে গেছে। সেই এলাকাগুলো এখন ধরা হয়েছে। সেখানে মানুষ এবং মালামাল পারাপারের জন্য আগে একটি টার্মিনাল ব্যবহার করা হতো। এবার টার্মিনাল আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। এক্সপোর্টের জন্য অালাদা টার্মিনাল আর ইমপোর্টের জন্য অালাদা টার্মিনাল। সেজন্য এখানে কিছু খরচ বেড়েছে। যেহেতু ভেরিয়েশন বেড়েছে, তাই এটি আবার একনেকে যাবে। একনেকে অনুমোদিত হলে তারা কাজ শুরু করতে পারবে। ’
মন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। আমরা সময়ক্ষেপণ না করে এই কাজটি করে দিলাম। যেন দ্বিতীয়বার আমাদের কাছে না আসা লাগে। একনেকে সব বিষয় অবহিত করে তাদের মাধ্যমেই চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে। যেন আমাদের কমিটিতে আর না আসে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিতে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সম্পাদনের জন্য জাইকার অর্থায়নে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দিন দিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গুরুত্ব বেড়ে যাচ্ছে। বিদেশি বিপুলসংখ্যক উড়োজাহাজ এখন ঢাকায় আসছে এবং ঢাকা থেকে আবার বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হচ্ছে। বিমানবন্দরটির বিদ্যমান অবকাঠামো এবং আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিধায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- টার্মিনাল ও সিকিউরিটি ইক্যুপমেন্টসহ ২ লাখ দশমিক ২৬ হাজার বর্গমিটারের নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ, টানেলসহ ৬২ হাজার বর্গমিটার মাল্টি লেভেল কার পার্কিং তৈরি, ৪১ হাজার ২০০ বর্গমিটার নতুন কার্গো কমপ্লেক্স, ৫ হাজার ৯০০ বর্গমিটার ভিভিআইপি কমপ্লেক্স তৈরি, ১ হাজার ৮৪০ বর্গমিটার রেসকিউ অ্যান্ড ফায়ার ফাইটিং স্টেশন ও ইকুইপমেন্ট ক্রয়, ৬৬ দশমিক ৮৭ লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ৪ দশমিক ৯৯ লাখ বর্গমিটার অ্যাপ্রোন তৈরি, এক লাখ বর্গমিটার ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণ, ১ লাখ ৫৮ হাজার বর্গমিটার সোল্ডার তৈরি, ৮ লাখ ৩৮ হাজার বর্গমিটার জিএসই রোড এবং ৩৩ হাজার বর্গমিটার সার্ভিস রোড তৈরিসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন কার্যক্রম।
বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ফিজিক্যাল প্রটেকশন সিস্টেম (পিপিএস); ২০১৯-২০১০ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১ম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি সংক্রান্ত প্রকল্প ও খুলনা জেলার ভুতিয়ার বিল এবং বর্ণলা সলিমপুর কোলাবাসুখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন প্রকল্প (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্টের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নাধীন আঠারোবাকী নদী খনন প্রকল্প।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
জিসিজি/এইচএ/