সোমবার (১৮ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করা এ স্টলটি ঘুরে দেখা যায়, কাঁসা-পিতলের বাহারি পণ্যের পসরা সাজিয়েছে তারা। বিভিন্ন ধরনের অলংকার ও গৃহস্থালির উপকরণও রয়েছে এরমধ্যে।
স্টলের বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে কাঁসা ও পিতলের নকশা করা থালা, কলস, গ্লাস, প্রদীপদানি, সুপারি কাটার জাঁতি, পানদানি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শো-পিসের মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, হাতি, ডলফিন, হাঁস, নৌকা, বাঘ ইত্যাদি।
স্টলের দায়িত্বরত আখতার মোহল খালেদা খানমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের কার্যক্রমের সদস্যরা এসব নিখুঁত ও অসাধারণ তৈজসপত্র তৈরি করেছেন। এগুলোর মধ্য দিয়ে গ্রাম-বাংলার পুরনো ঐতিহ্যকেই ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন তারা।
তিনি জানান, ওজনভেদে প্রতিটি পণ্যের দাম পড়বে ছয়শ থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা। এরমধ্যে কাঁসার থালা ২২শ টাকা, গ্লাস ৮শ ৫০ টাকা, পানদানি ২২শ টাকা। আর শো-পিস এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে নকশা এবং ওজনের ওপর ভিত্তি করে।
পণ্য নিয়ে স্টলের দায়িত্বে থাকা ফরিদা ইয়াসমিন নার্গিস বলেন, এ শিল্পের সেই সুদিন আর নেই। লোহা, টিন, অ্যালুমিনিয়ামের সস্তা পণ্যের সঙ্গে দামের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে পিতল-কাঁসার আভিজাত্য। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির সংযোগ ঘটেনি এ খাতে। অভাব রয়েছে পুঁজিরও। সেখান থেকে শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি কাজ করে যাচ্ছে এ শিল্পটি নিয়ে। একই সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে এ শিল্পের সঙ্গে পরিচয় করানোও এ উদ্যোগের অন্যতম অংশ।
শরীয়তপুর জেলার দু’টি উপজেলার মোট ১৫টি পরিবার এখনও এ পেশার সঙ্গে যুক্ত বলে জানান তিনি। তাদের পুঁজি দিয়ে পণ্য উৎপাদন এবং পরে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়।
মেলায় কাঁসা-পিতলের দোকানে ঘুরতে আসা ইব্রাহীম আহমেদ বলেন, আমার বাসায় এখনও কাঁসার প্লেট ছাড়া খাওয়া হয় না। এখান থেকে নতুন একটি গ্লাস কিনলাম। আধুনিক যুগে এসে এ জিনিসগুলো দেখাই যায় না। তবুও আমাদের প্রজন্মকে চেনানোর জন্য হলেও নিজেদের প্রয়োজনেই ঐতিহ্যবাহী এ জিনিসগুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
এইচএমএস/এবি/এএ