সপ্তাহব্যাপী মেলা থেকে ৪৫ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪২ টাকা আদায় হয়েছে। এ কয়দিনে রিটার্ন দাখিল করেছেন ২০ হাজার ২৫৪ জনে, সেবা নিয়েছেন ৩৮ হাজার ৬৩১ জন এবং নতুন ইটিআইএন নিয়েছেন ১ হাজার ৮৬৩ জনে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভাগের ৯টি স্থানে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ জেলা ও মৌলভীবাজার জেলায় চারদিন করে এবং গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ছাতক, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া উপজেলায় ২দিন করে কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট নগরের মোহাম্মদ আলী জিমনেশিয়ামে সাত দিনব্যাপী মেলা থেকে মোট আদায় হয়েছে। ৪৪ কোটি ৪১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৬ টাকা। বিপরীতে রিটার্ন দিয়েছেন এক হাজার ৩শ ৪৪ জন, সেবা নিয়েছেন ২৬ হাজার ৯৯৮ জন এবং নতুন করে ইটিআইএন নিয়েছেন ৯১১ জন।
মৌলভীবাজার চারদিনের মেলা থেকে আদায় হয় ৫০ লাখ ২১ হাজার ১৪৫ টাকা। বিপরীতে রিটার্ন দেন ১ হাজার ৯০৯ জন, সেবা নেন ২ হাজার ৬ ৭৫ জন এবং নতুন করদাতা হয়েছেন ১৬৮ জন।
সুনামগঞ্জে ২৯ লাখ ৭৩ হাজার ৮০২ টাকা আদায় হয়, বিপরীতে রিটার্ন দিয়েছেন ১ হাজার ৩৯১ জন, সেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৮১১ জন এবং নতুন কর দাতা হয়েছেন ২৭৯ জন।
হবিগঞ্জে ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার ১২৩ টাকা কর আদায় হয়েছে চারদিনের মেলায়, বিপরীতে রিটার্ন দেন ২হাজার ৫২২ জন, সেবা নেন ৩ হাজার ১০৫ জন এবং নতুন ইটিআইএনধারী হয়েছেন ২৯১ জন।
এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭২০ টাকা কর আদায় হয়, বিপরীতে রিটার্ন দেন ৯২ জন, সেবা নেন ১৩১ জন এবং নতুন ইটিআইএনধারী হয়েছেন ১৮ জন। ছাতকে ৪৪ হাজার ৫২৮ কর আদায় হয়, রিটার্ন দেন ৪৫ ও সেবা নেন ১৫০ এবং নতুন ইটিআইএন নেন ১৮ জন। বালাগঞ্জে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৩৫ টাকা কর আদায় হয়, বিপরীতে রিটার্ন দেন ১৭৮ জন, সেবা নিয়েছেন ৫০১ ও নতুন ইটিআইএনধারী হয়েছেন ১৯ জন। শ্রীমঙ্গলে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩ টাকা কর আদায় হয়েছে। বিপরীতে রিটার্ন দেন ৪৭৬, সেবা নেন ৩৬২ ও নতুন কর দাতা হয়েছেন ৯৫ জন। এছাড়া কুলাউড়া উপজেলায় ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬ টাকা কর আদায় হয়। বিপরীতে রিটার্ন দেন ৫৯৭ জনে, সেবা নেন ৮৯৮ জন এবং ৬৪ জন নতুন করদাতা হয়েছেন।
মেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সাতদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলার ৬ষ্ট দিনে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আদায় হয় ৩১ কোটি ৬০ লাখ ১২ হাজার ৭৫২ টাকা।
৫দিনে সোমবার (১৮ নভেম্বর) আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৭ টাকা। রোববার (১৭ নভেম্বর) ৪র্থ দিনে আদায় ছিল ২০ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার ২৯১ টাকা। শনিবার (১৬ নভেম্বর) ৩য় দিনে আদায় ছিল ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৭ হাজার ৭৯৮ টাকা, দ্বিতীয়দিনে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ৬ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৯৯১ টাকা এবং মেলার উদ্বোধনী দিনে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ২ কোটি ৪৩ লাখ ১৫ হাজার ৩০৯ টাকা কর আদায় করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সিলেট কর অঞ্চলের কর কমিশনার রনজীত কুমার সাহা বলেন, সিলেটের মেলা থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি কর আদায় হয়েছে। মেলাসহ অর্থ বছরে ৫ হাজার নতুন করদাতা হয়েছেন সিলেট কর অঞ্চলে। এ সংখ্যা আরও বাড়তো,যদি পাসপোর্ট দিয়ে টিআইএন করা যেতো। কারণ প্রবাসীদের অনেকের জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় আগ্রহ থাকা স্বত্ত্বেও ইটিআইএন নিতে পারেননি। কেবল মেলায় গত বছরের চেয়ে এবার ১ হাজার ২০৫ জন বেশি নতুন করদাতা নিবন্ধিত হয়েছে, ৪ হাজার ৯২২ জন বেশি কর সেবা নিয়েছেন। এবারের মেলায় আগের বছরের তুলনায় ৪ হাজার ৯২৫ জন বেশি রিটার্ণ দাখিল করেছেন এবং ১ কোটি ৩ লাখ টাকা বেশি কর আদায় হয়েছে। এই সফলতার নেপথ্যে কর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি অক্লান্ত পরিশ্রমের গুরুত্বারুপ করে তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি। আর সিলেটের মানুষও স্বতস্ফূর্তভাবে মেলায় এসে সেবা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেটে ৪০ হাজার নতুন করদাতা সৃষ্টি লক্ষ্যে সিলেট কর অঞ্চল কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য ওয়ার্ডভিত্তিক সার্ভে কার্যক্রম চলছে। যদিও মেলার কারণে সার্ভে গতি কিছুটা মন্তর রয়েছে।
‘আমরা স্বাবলম্বী হব সকলে কর দেব’ এই স্লোগানে সাত দিনব্যাপী আয়কর মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল ফজল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. আবু সাইদ সুহেল, যুগ্ম কর কমিশনার পঙ্কজ লাল সরকার ও সাহেদ আহমদ চৌধুরী, উপ কর কমিশনার (সদরদপ্তর ও প্রশাসন) কাজল সিংহ, উপ কর কমিশনার সা-আদ উল্লাহ ও আবু সাঈদ।
সিলেট কর অঞ্চলে বর্তমান করদাতা ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৪০ জন। এরমধ্যে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯২২ জন ইনঅ্যাক্টিভ। যারা কোনো না কোনো সময় ফাইল খুলেছেন, কিন্তু আয়কর দেন না। তাই করদাতাদের উৎসাহিত করতে এবারও ৪ ক্যাটাগরিতে ৩৫ জনকে সেরা করদাতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০১৯-২০ সালে ৯৬২ কোটি টাকা টার্গেট নিয়ে এগুচ্ছে সিলেট কর অঞ্চল।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
এনইউ/এএটি