সরবরাহ থাকায় শুধু বরিশাল নগরের পোর্ট রোডস্থ পাইকার বাজারে নয় স্থানীয় খুচরো বাজারগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু স্থানীয় বাজার নয়, বরিশাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব ইলিশ পাঠানো হচ্ছে।
মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মূলত ইলিশের দুটি মৌসুম। একটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, অন্যটি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি। কিন্তু আমাদের দেশে অতি আহরণের ফলে ইলিশের দুটি মৌসুমের মধ্যে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মৌসুমটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে বিগত কয়েক বছরে সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও সাগরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে, আর তারই বদৌলতে এখন বিলুপ্ত মৌসুমেও দেখা মিলছে ইলিশের।
জেলেরাও জানাচ্ছেন একইরকম কথা। তারা বলছেন, চলতি বছরে নিয়মিত মৌসুমের বাইরেও সাগরের পাশাপাশি নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে। এর আগে মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এবং আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন বিপর্যয়ের ফলে বিশেষ করে নদীতে ইলিশ তেমন একটা ধরা পড়ছিল না।
এদিকে শীত মৌসুমেও ইলিশ সহজলভ্য হওয়ায় খুশি মাছ ব্যাবসায়ীরাও। তারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে এই সময় অনেকটাই ইলিশশূন্য থাকতো বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকাম। যাওবা কিছু ইলিশ পাওয়া যেতো তার দাম ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু ইলিশের আমদানি থাকায় গত কয়েকদিন ধরে দাম অনেকটাই কমে গেছে।
পোর্টরোডর মাছ ব্যবসায়ী মাসুম জানান, শীত মৌসুমে ইলিশের চাহিদা তেমন একটা থাকে না, তাই এ সময়টাতে দাম এমনিতেও কম থাকে। আবার সম্প্রতি নদ-নদীতে ইলিশ ধরা পড়ায় দাম আরও কমে গেছে। এখন ৫শ’ গ্রাম থেকে ১২শ’ গ্রাম পর্যন্ত আকার ভেদে ইলিশ মণপ্রতি ২০ থেকে ৩৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাইকাররা এসব আমদানি ইলিশ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছেন। এসব ইলিশের সংরক্ষণাগার থাকলে আরও ভালো হতো বলে অভিমত এ মাছ ব্যাবসায়ীর।
জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (হিলসা) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা নিধন বন্ধ ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকা এবং নানামুখী অভিযানের কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। আর একই সঙ্গে প্রায় ২০ বছর আগের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির ইলিশের মৌসুম ফিরে এসেছে। এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
এমএস/এইচজে