তিনি বলেছেন, দেশে মানুষের টোল দিতে কোনো আপত্তি নেই। তবে সমস্যা হলো আমরা এখনও অটোমেশন করতে পারিনি।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, কমিটিতে মোট সাতটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতায় টোল প্লাজা অটোমেশন প্রকল্প রয়েছে। আজ যে প্রস্তাবটি এসেছে সেটা হলো সওজের আওতায় ধলেশ্বরীতে কম্পিউটারাইজড টোল প্লাজা করা হবে। এটা ছোট প্রকল্প।
‘এখানে আগে যা ছিল তার থেকে সামান্য কিছু অর্থাৎ ৮ কোটি ১৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটা ভেরিয়েশন প্রকল্প। আগে এ প্রকল্পটির কাজ চলছিল। নতুন করে টাকাটি দিলে কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে মোট ব্যয় হবে ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। ’
মুস্তফা কামাল বলেন, টোল দিলে তিন মাসেই গাড়ির দাম উঠে যায়। এখন আমাদের এখানে যে কাজটি জরুরি ভিত্তিতে করা দরকার সেটা হলো- অটোমেশন। টোল ব্যবস্থায় অটোমেশন করতে হবে, গাড়িতে প্রিপ্রেইড মিটার লাগানো থাকবে। ফলে গাড়ি এক সেকেন্ডের জন্যও থামবে না। আসবে আর যাবে।
‘যতক্ষণ পর্যন্ত প্রিপ্রেইড মিটার কাজ করবে এবং সেই মিটারে অর্থ থাকবে সেটা চলতে পারবে। টাকা শেষ হয়ে গেলে অটোমেটিক গাড়ি চলবে না। আবার মিটারে টাকা ভরতে হবে। ’
তিনি বলেন, পোস্তগোলা ও ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় অটোমেশন করা হবে। সস্প্রতি পোস্তগোলার টোল ব্যবস্থাপনা অটোমেশন করতে বলেছিলাম। আশা করি অচিরেই হয়ে যাবে।
‘টোল না নিলে আমরা যে রাস্তা-ঘাট করছি, তার রক্ষণা-বেক্ষণ করা কঠিন হয়ে যাবে। টোল আদায় ব্যবস্থা সারা বিশ্বেই প্রচলিত রয়েছে,’ যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ডাকঘর সঞ্চয় ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকিং অটোমেশন বাস্তবায়ন হলে কেউ লিমিট ক্রস করতে পারবে না। পেনশনভোগীদের জন্য পরিমাণ বেশি করা হয়েছে। পোস্ট অফিসে বিদ্যমান আইনে রয়েছে- ৩০ লাখ, যা অনেক বেশি। সেখানে সুদের হার ১১ দশমিক ২ শতাংশ রাখা হয়েছে।
ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার কমনোর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যখন দেখলাম সবাই চলে যাচ্ছে পোস্ট অফিসে, তখন ভাবলাম-বন্ধ করবো কীভাবে? বন্ধ করতে হলে বলতে হবে ইন্টারেস্ট নাই। যদি একবার কিনে ফেলে তাহলে তো করার কিছু নাই, এখন কিনেন ৬ বা ২ বা এক পারসেন্ট ইন্টারেস্টে। অটোমেশন শেষ হলে এর জন্য যা প্রযোজ্য, তা পাবেন।
‘উদ্দেশ্য হচ্ছে- ৩০ লাখ, যা ৩০ লাখই থাকবে এবং ওখানে যদি ইন্টারেস্ট ১১ পার্সেন্ট থাকে, ১১ পার্সেন্ট-ই থাকবে না কেন? তারা (গ্রাহক) কম পাবে কেন? আমি তো অটোমেশন করতে পারছি না। সবাই ওখানে দৌড়াচ্ছে। ১৭ মার্চ অটোমেশন শেষ হলে আগের সুদের হারে চলে যাবে। অটোমেশনের কাজ শেষ হলেই এ ঘোষণা দিতে পারবো, আশা করছি এ কাজ করতে পারবো। ’
ডাকঘর অটোমেশন হওয়ার পর গ্রাহকদের টিআইএন ও আইডি নম্বর নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ২ লাখ পর্যন্ত আমরা কিছু চাইবো না। তাদের কোনো ধরনের টিআইএন জমা দিতে হবে না। কিন্তু ইন্টারেস্ট ১১ প্লাস পাবে। ২ লাখ পর্যন্ত গ্রাহক আছেন যাদের অনেকেই সই করতে পারেন না, এতটুকু তাদের দিয়ে হবে। আমাদের লক্ষ্য হল যাদের জন্য সঞ্চয়পত্র চালু হল তারাই পাবে, বেশি মিসইউজড হচ্ছিল বলে, এভাবে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে।
ব্যাংক কমিশন গঠন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক কমিশন করবো অবশ্যই করবো, তবে কবে করবো তা িএখনই বলা যাচ্ছে না। সময় লাগবে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক পরিপত্রে ডাকঘরে যে সঞ্চয় ব্যাংক রয়েছে সেই ব্যাংকের সুদের হার সরকারি ব্যাংকের সুদের হারের সমপর্যায়ে নিয়ে আসা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ডাকঘরে চারভাবে টাকা রাখা যায়। ডাকঘর থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাব খোলা যায়। আবার ডাক জীবন বিমাও করা যায়। এবার সুদের হার কমেছে ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে।
সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অবশ্য এরপরে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০/আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা
জিসিজি/এমএ