ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মাছ-মাংসের দাম বাড়লেও কমেছে ডিম, পেঁয়াজ-রসুনের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২০
মাছ-মাংসের দাম বাড়লেও কমেছে ডিম, পেঁয়াজ-রসুনের দাম

ঢাকা: রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে মাছ-মাংসের দাম বাড়লেও কমেছে ডিম, পেঁয়াজ-রসুনসহ সবজির দাম। মাছের বাজারও চড়া। অপরিবর্তিত রয়েছে আদাসহ অন্যান্য মসলার ও চাল, ডাল, আটা-ময়দা, ভোজ্যতেলসহ অন্য মুদিপণ্যের দাম।

অধিকাংশ সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কিছু সবজির দাম বাড়তি। তবে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম।

 

মাছ-মাংসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রাতার মধ্যে দেখা দিয়েছে ভিন্ন মত। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে মালের সংকট হওয়ায় দাম বাড়তি। তবে ক্রেতারা বলছেন, রমজানের আগেই এখন থেকে নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা। বাজার মনিটরিং না হলে রমজানে অস্থিরতা তৈরি হবে।

শুক্রবার (০৬ মার্চ) রাজধানীর পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার, নারিন্দা বাজার, শাঁখারি বাজার, ধোলাইখাল (পুকুরপাড়) বাজার, কমলাপুর, টিঅ্যান্ডটি, ফকিরাপুল, সিপাহীবাগ, খিলগাঁও বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গরু, মহিষ ও খাসির মাংসের দাম। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা।  আর কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস ৮৩০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কমেছে মুরগি ও ডিমের বাজারে। ১০ থেকে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ টাকা, সোনালী ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে।

কমেছে ডিমের দাম। ৫ থেকে ১০ টাকা কমে লাল ডিম প্রতি ডর্জন ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, দেশি ১৬০ টাকা, সোনালী ১৪০, হাঁস ১৩০ থেকে ১৪০, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে পটল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, উস্তা ১২০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। প্রতি পিসে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, জালি কুমরা ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

দাম অপরিবর্তিত আছে বেশিরভাগ সবজির। বাজারে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি-ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বড় কচু ৫০ টাকা, বিট ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সিমের বিচি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন শাক। বাজারে প্রতি আটি (মোড়া) কচু শাক ৭ থেকে ১০ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, মূলা ১২ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বেড়েছে মাছের দাম। কেজি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বর্তমানে প্রতি এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে ১১০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ টাকা, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে।

কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি কাচকি ৩৫০ টাকা কেজি, মলা ৩৫০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বাগদা ৪৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩০০ থেজে ৪৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দাম কমেছে পেঁয়াজ ও রসুনের। কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, চায়না মোটা পেঁয়াজ ৬০, রসুন দেশি ১০০, চায়না ১৬০, তিন কোয়া রসুন ২০০, আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে বাজারে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল, চাল ও মসলা। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা লিটার।  খোলা সাদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা লিটার। অপরিবর্তিত রয়েছে সরিষার তেলের দাম। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।

এসব বাজারে বস্তাপ্রতি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পযন্ত বেড়ে প্রতিবস্তা চিনিগুড়া চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ২৫০ টাকা, মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টাকা, মিনিকেট (পুরান) আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৫৫০ টাকা, আটাশ চাল ১ হাজার ৮৫০ টাকা, বিভিন্ন প্রকার নাজির চাল প্রতিবস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায়।

এসব বাজারে প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক/দেড় মাস আগে এলাচ বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা কেজি দরে। বর্তমানে জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে।  

এর আগে জয়ত্রী বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে। জায়ফল গত দেড় মাসে দুই গুণ বেড়ে বর্তমান বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এর আগে জায়ফল বিক্রি হয়েছিল ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি দরে।

রমজান মাস আসতে এখনও অনেক দিন বাকি। এর মধ্যে মাছ-মাংসের বাড়তি দাম নিয়ে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে।  

সোহাগ হোসেন নামে রায় সাহেব বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, রমজান মাসকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এখন থেকেই তারা মাছ-মাংসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। রমজানে অবস্থা আরও খারাপ হবে। তাই এখন থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা না হলে রমজানে অস্থিরতা দেখা দেবে।

তবে এ ক্রেতার সঙ্গে একমত নন খিলগাঁও বাজারের মাংস বিক্রেতা শফিকুল। তিনি বলেন, পাইকার বাজারে মালের সংকট বা দাম বেশি হলে খুচরায় দাম বেড়ে যায়। এখন গরু-মহিষের দাম বেশি হওয়ায় আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২০ 
ইএআর/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।