সরকার আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিলেও হুজুগে এক শ্রেণির মানুষ খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে-এমন আশঙ্কায় তা সংরক্ষণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন দোকানপাটে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারেই এখন দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের মোটামুটি ভিড়।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, ধানমন্ডিসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারগুলোসহ বিভিন্ন সুপারশপেও বিক্রি বেড়েছে। কেউ কিনছেন শিশু খাদ্য, ডায়াপার। আবার অনেকেই কিনছেন চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
এসব ক্রেতাদের মতে, করোনার প্রভাবে স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে, বিমান রুট বন্ধ হয়ে গেলে খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় বেড়ে যেতে পারে পণ্যের দাম। এ আশঙ্কা থেকেই সাধারণ মানুষ সাধ্য অনুযায়ী পণ্য কিনছেন।
তবে সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, আতঙ্কিত হয়ে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বাড়তি কেনাকাটা একেবারেই অহেতুক কাজ। বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা দোকানি ও কয়েকটি সুপার শপের বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন ধরেই পণ্য কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। তারা চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য কিনছেন বেশি।
আগে প্রসাধনীসহ অন্যান্য পণ্যগুলোর বিক্রি বেশি হলেও এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল, আটা, শিশুখাদ্য, ডায়াপার, জীবাণুনাশক ওষুধ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।
স্বপ্নের আউটলেট থেকে বস্তাবর্তি বাজার করে বের হচ্ছিলেন গৃহিণী সালমা আক্তার। কী কিনেছেন- এমন প্রশ্ন করতেই বাংলানিউজকে তিনি বলেন, একমাসের বাজার করেছি। ফ্যামেলিতে যা যা প্রয়োজন তাই কিনেছি।
স্বপ্ন সুপার সপের একটি আউটলেটের ব্যবস্থাপক সাইমন আহমেদ বলেন, গত দুদিন ধরে ক্রেতাদের মধ্যে বেশি করে এসব পণ্য কেনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে পাইকারি বাজার থেকে পণ্য পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বা পণ্য সংকটের কোনও আলামত এখন পর্যন্ত নেই।
প্রায় একই কথা জানিয়ে গুলশান মিনাবাজারের শাখার এক বিক্রয়কর্মী বলেন, আমাদের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো। ঊর্ধ্বতনরা জানিয়েছেন পণ্যের সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই।
এদিকে আপাতত পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ারও কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন কারওয়ান বাজারের নিত্যপণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. সোলাইমান মিয়া।
এদিকে কোনোভাবেই আতঙ্কিত না হয়ে অযথা বাড়তি পণ্য কিনে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার জন্য সাধারণ জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকার বিষয়টি গুরুত্বসহ পর্যবেক্ষণ করছে। এই মুহূর্তে বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই রোজা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সে জন্য টিসিবিকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজন দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব পণ্য বাজারে ছাড়া হবে।
এখনও পরিস্থিতি খুব ভালো অবস্থায় আছে। ভয়ের কারণ নেই। আশা করি বাজারে কোনও পণ্য সংকট হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
এইচএমএস/এমএ