অন্যদিকে অপরিবর্তিত আছে মাছ, মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম। আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল, খোলা সয়াবিন।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, রায়সাহেব বাজার, নারিন্দা বাজার, পুকুর লেন, বংশাল, বাবু বাজার, ডালপট্টি বাজার, দৈনিক বাংলার কালভার্ট রোড, ফকিরাপুল বাজার ঘুরে এসব তথ্য দেখা যায়।
এসব বাজারে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বিভিন্ন সবজির দাম। দাম কমে প্রকারভেদে প্রতিকেজি আলু ২০ থেকে ৩০ টাকা, সিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, উস্তা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন (প্রকারভেদে) ৩০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বড় কচু ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৪০ টাকা ও সিমের বিচি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিদরে।
এসব বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি-ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, বাঁধা কপি (গ্রিন) ৫০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিহালি কলা ২০ থেকে ২৫ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়।
আর প্রতি আঁটি (মোড়া) কচু শাক ৫ থেকে ৮ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা থেকে ১২, লাউ ও কুমড়া শাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, পুই শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, মহিশের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা কেজি, বয়লার ১২০ টাকা, বাজারভেদে লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালী ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিদরে।
প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, দেশি মুরগির ১৪০ টাকা, সোনালী মুরগির ডিমি বিক্রি হচ্ছে ১১০, হাঁস ১২০ টাকা, কোয়েলের ডিম ১০০ পিস ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের বাজার। এসব বাজারে প্রতিকেজি কাঁচকি ৩০০ টাকা কেজি, মলা ৩০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাগদা ৪৫০ থেকে ১০০০ টাকা, হরিণা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেজে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাস ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দাম কিছুটা কমেছে ইলিশের। বৈশাখ উপলক্ষে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়তি দাম রাখা হলেও এখন আবার আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এসব বাজারে বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১০৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০, ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে।
বাজারে আদা-পেঁয়াজের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত আছে রসুনের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আদার দাম খুচরা বাজারে ফের ২০ টাকা বেড়েছে। ২০ টাকা বেড়ে এখন প্রতিকেজি বার্মা, চায়না ও দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগে কেজিতে দাম ছিল ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিদরে। গত সপ্তাহে এর দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। এসব বাজারে প্রতিকেজি রসুন দেশি (মানভেদে) ৭০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল ও খোলা সয়াবিন। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা লিটার, খোলা সাদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা লিটার। অপরিবর্তিত আছে সরিষার তেলের দাম। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
এসব বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট পুরান ৬৫ টাকা, বাসমতী ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা, পাইজাম ৪২ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
বাজারে প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, এ্যাংকর ৪৬ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা।
প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪৬০০ থেকে ৫৫০০ টাকা কেজি দরে, জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ থেকে ৩৬০০ টাকা কেজি দরে। জায়ফল বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে রমজানের আগ মুহূর্তে আদা-পেঁয়াজের বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের আগে অতি মুনাফার জন্য বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। আর বিক্রেতাদের দাবি, করোনা ভাইরাসের কারণে আমদানি না থাকায় দাম বাড়তি।
রায় সাহেব বাজারে নাসিরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, রমজানের আগে পেঁয়াজ-আদার দাম বাড়বে এ নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন।
তবে এ ক্রেতার সঙ্গে একমত নন বিক্রেতা সুমন। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আদার আমদানি নেই। এ কারণে পাইকারে বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে, এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। পাইকারি বাজারে দাম কমলে এখানেও দাম কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
ইএআর/এইচএডি/