কিন্তু মানুষ সচেতন হচ্ছে না কিছুতেই। রাস্তাঘাটে চলাফেরায় সামাজিক দূরত্ব কিছুটা মানা হলেও রাজধানীর বাজারগুলোর অবস্থা ভয়াবহ।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও রাজধানীর বাজারগুলো যেনো মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। কোনোরকম সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই বাজার করছেন ক্রেতারা। অনেক ক্রেতা মুখের মাস্ক খুলে বিক্রেতার কাছে জানতে চাচ্ছেন ‘আপনার পটল, আলুর দাম কতো’। এভাবেই অনেকে আবার রীতিমতো দরদামও করছেন। আর ক্রেতা ধরে রাখতে সামাজিক দূরত্বের কোনো কথা বলছেন না বিক্রেতারা। তাদের আশঙ্কা, এমনটা বললে হয়তো ক্রেতারা চলে যাবেন অন্য বিক্রেতার কাছে।
শরিফ নামে এক ক্রেতা রাজধানীর মিরপুর এক নম্বরে বাজার করতে এসেছেন। তিনি মাস্ক খুলে সবজির দরদাম করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আসলে বাজারে সব সময় কোলাহল থাকে, মাস্ক পরা অবস্থায় বিক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তিনি শুনতে পাবেন না। তাই মাস্ক থেকে মুখ সরিয়ে কথা বলছি।
একই চিত্র দেখা গেছে মিরপুর শাহ আলী মাজার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সংলগ্ন বাজারেও। এখানে অনেক বিক্রেতা মাস্ক ছাড়াই বিক্রি করছেন পণ্য।
এ বাজারের বিক্রেতা আহমেদ আলী বলেন, এখানে খুচরা বাজারের ক্রেতারা আসেন। বাজারে মানুষের ভিড় থাকায় শব্দের কারণে ক্রেতার কথা বোঝা অসুবিধা হয়। এ কারণে মাস্ক পরা হয় না। তবে মাস্ক পরা ভালো, না হলে বিপদ হতে পারে।
এছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর মগবাজার কাঁচাবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার এবং মালিবাগ রেলগেট কাঁচাবাজারেও। সেখানেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। যে যার খেয়াল-খুশি মতো বাজার সারছেন।
চম্পা ও টুম্পা নামে দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মালিবাগ রেলগেট বাজারে মুরগি কিনতে এসেছেন গৃহিনী শান্তা।
শান্তা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে কম আসা ভালো, কার কি রোগ আছে বলাতো যায় না।
মুরগি কিনতে তিনজনের বাজারে আসা প্রসঙ্গে শান্তা বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক দিন ধরে তারা বাসায় বসে আছে। তাই আজ তারা বাসা থেকে একটু বের হয়েছেন। বাইরে আলো-বাতাসেরও প্রয়োজন আছে। তবে বাজার থেকে ফিরে গোসল করেই বাসার কাজে হাত দেবো।
মালিবাগ রেলগেট বাজারের ক্রেতা জামান বলেন, সময় খুব খারাপ যাচ্ছে আমাদের। আমার তিন থেকে চার দিনের বাজার একবারে করলে তো অসুবিধা নেই। তবে কেন বার বার কারণে-অকারণে বাজারে আসতে হবে। নিজেরা সচেতন না হওয়া মানে মৃত্যু ঢেকে আনা।
এ বাজারের বিক্রেতা তৌহিদ বলেন, দেখেন আমি কাকে কি বলবো, সব কিছু জেনেও কিছু বলতে পারি না, অনেকেই বাজারে দরকার না থাকলেও আসছে। তাদের নাকি বাসায় থাকতে অসুবিধা হয়, তাই ঘুরতে আসে। যদি কাস্টমারকে বলি একটু দূর থেকে বাজার নেন। হয়তো একথা শুনে কাস্টমার অন্যের দোকানে চলে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২০
ইএআর/আরআইএস/