সোমবার (২৭ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দেশে পর্যাপ্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত রয়েছে।
এদিকে গত ২৩ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রমজান উপলক্ষে এবং করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন, মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন- চাল, ডাল, তেল, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদাসহ সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। রমজান মাসের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত আগে থেকেই বাড়ানো হয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের চাহিদার তুলনার বেশি পণ্য উৎপাদন করেছে। আমদানিযোগ্য পণ্য অনেক আগেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি করা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু পণ্য পরিবহন এবং আমদানি করা পণ্য দ্রুত খালাসের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো পণ্যেরই সংকট নেই এবং মূল্য বাড়ার আশঙ্কা বা কারণ নেই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্বশীল হয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। সব পণ্যের সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গঠিত টাস্কফোর্স এবং বিভিন্ন কমিটিকে আরও তৎপর হয়ে কাজ করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এ বছর রমজান উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর সাশ্রয়ী মূলে ট্রাক সেলের মাধ্যমে বিক্রয় করা হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় এবার বেশি পরিমাণে পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। টিসিবির নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় তিন হাজার ডিলার এসব পণ্য ট্রাক সেলে বিক্রয় করছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতে সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এগুলো হলো: সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে ও রমজানে খাদ্যসামগ্রী পরিবহনে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্থানীয় পর্যায়ে পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে, টিসিবির ট্রাকসেল পুনর্বিন্যাস করার বিষয় বিবেচনা করা হবে, ডলারের মূল্য বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে সৃষ্ট কনটেইনার জট নিরসনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রেখে, প্রয়োজনে জরুরি পণ্য খালাসের জন্য আমদানিকারকদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তা দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিদিনের বাজারদর সিটি করপোরেশনকে সরবরাহ করার বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা, ঢাকার জেলা প্রশাসন রমজান উপলক্ষে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় পরিচালিত টিসিবির পণ্য বিক্রয় স্থান গুলোতে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সারাদেশে পাইকারি বাজার চালুর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর তাদের অভিযান আরও জোরদার করবে এবং একই সঙ্গে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় অব্যাহত রাখবে, করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশের বাজারে এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ ওষুধসামগ্রী বিকল্প বাজার সন্ধানে এখন থেকেই আমদানিকারকরা প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।
এছাড়া টিসিবি বছরব্যাপী তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গঠিত টাস্কফোর্স আরও জোরদারভাবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২০
জিসিজি/আরআইএস/