২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটে পদ্মাসেতু প্রকল্পে ৫ হাজার এবং চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হবে।
নতুন এডিপি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন এডিপির একটা খসড়া ঠিক করেছি। তার আগে মঙ্গলবার একটা মিটিং করবো। এটা পরে এনইসি সভা ডেকে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করবেন। এডিপিতে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দ সব থেকে বেশি পরিবহন ও সেতু বিভাগে। কারণ পদ্মসেতু, মেট্রোরেল, পদ্মারেল লিংকের মতো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা চাহিদার কথা বিবেচনা করেই নতুন এডিপির খসড়া ঠিক করেছি। এই এডিপি গুরুত্বপূর্ণ কারণ পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেল এই অর্থবছরে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। করোনা অনেক আঘাত দিয়েছে উন্নয়ন কাজে। তারপরও আমরা আশা ছাড়ছি না।
পরিকল্পনা বিভাগ সূত্র জানায়, করোনা সংকটের মধ্যেই চলমান পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ। দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের উপর ২৯তম স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে। ফলে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৪ হাজার ৩৫০ মিটার।
২৮তম স্প্যান বসানোর ২৩ দিনের মাথায় বসানো হলো ২৯তম স্প্যানটি। পদ্মাসেতুতে স্প্যান বসানো বাকি এখন ১২টি। সেতুর কাজ সামনে আরও এগিয়ে নিতে এই প্রকল্পে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
মেট্রোরেল-৬ প্রকল্পের অগ্রগতি ভালো ছিল। তবে কোভিড-১৯ প্রকল্পের গতিরোধ করেছে। এরপর সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষ ২০২১ সালের বিজয় দিবসে বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের সম্পূর্ণ অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এজন্য নতুন অর্থবছরে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পদ্মাসেতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতু রেল লিংক প্রকল্প। প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া-কেরাণীগঞ্জ-শ্রীনগর থেকে মাওয়ায় পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে। জানুয়ারি ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে। আগের পরিকল্পনায় কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ। প্ররকল্পে কাজ এগিয়ে নিতে নতুন অর্থবছরে ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
চলমান যমুনা নদীর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের কাজ। মোট প্রকল্প ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৬ হাজার ৮০৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। চলমান প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সমাপ্ত হবে। এই ধারাবাহিকতায় ২০২১-২১ অর্থবছরে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে ২ হাজার ৭৪৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এই দুটি প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে রেলখাতে ১২ হাজার ৪৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে, এরপর রয়েছে শিক্ষা খাত। এডিপি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার ১৭টি খাতের মধ্যে বিভাজন সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরি করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিদ্যুৎ খাতে দেওয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রয়েছে শিক্ষা খাতে, ২৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৪ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২০
এমআইএস/এইচএডি/