ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বগুড়ায় মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

কাওসার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২০
বগুড়ায় মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

বগুড়া: বগুড়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয় উপক্ষো করে সব বয়সী নারী-পুরুষ ঈদের কেনাকাটার বেরিয়ে পরায় মার্কেটগুলোতে ব্যাপক ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত না করেই চলছে কেনাকাটা।

রোববার (১০ মে) দুপুর ২টার দিকে বগুড়া শহরের নিউমার্কেট এলাকায় মানুষের এমন উপচেপড়া ভিড় চোখে পড়ে।  

জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়-সীমা সকাল ১০টার আগেই মার্কেটমুখী সড়কগুলোতে নামে মানুষের স্রোত।

সরকারিভাবে কেনাকাটার পরিসরকে সীমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনো মার্কেটেই ক্রেতা বা বিক্রেতারা তা মানছেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শহরের বিভিন্ন সড়কে এবং মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে মার্কেটগুলোতে বিশেষ করে শহরের সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান নিউমার্কেটে মানুষের ভিড় বেশি। সেখানে পোশাক, জুতা-স্যান্ডেলের দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষগুলো শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছে না। পছন্দের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকস্সহ অন্য সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদের একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি এমনকি ঠেলাঠেলিও করতে দেখা গেছে।

দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা সকাল থেকে শহরে আসতে শুরু করে। অনেকেই মার্কেট খোলার অপেক্ষায় মার্কেটের সামনে বসে থাকেন। তৈরি পোশাকের মার্কেট আল-আমিন কমপ্লেক্স, শেখ সরিফ সুপার মার্কেট, রানার প্লাজা ও জলেশ্বরীতলা এলাকায় তৈরি পোশাকের বিভিন্ন শো-রুমে মানুষের ভিড় ছিল কম।

নিউমার্কেটের কসমেটিক্স দোকানি সুমন আল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ সময় মার্কেট বন্ধ থাকায় ব্যবসায় বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। যেহেতু সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাই দোকান খুলেছি।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আর এতে নিজের পরিবারের ঝুঁকি রয়েছে জেনেও বাধ্য হয়ে বিকিকিনি করতে হচ্ছে।

কেনাটাকা করতে আসা আমজাদ হোসেন, মাসুমা খাতুন, সানজিদা আদিল, এমদাদুলসহ একাধিক ক্রেতা বাংলানিউককে বলেন, মার্কেট বন্ধ থাকায় জরুরি অনেক কিছুই কেনাকাটার ছিল। তাই বাধ্য হয়ে শহরে এসেছেন কেনাকাটা করতে।  

তারা বলেন, মার্কেটে জীবাণুনাশক ব্যবহারের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকলে ভয়টা একটু কমবে।

এ দিকে দোকানপাট খোলার কারণে শহরে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। লোকজনকে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতায়াত না করার আহ্বান জানিয়ে শহরে মাইকিং করা হলেও সে কথা মানছেন না অনেকেই। শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথগুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

করোনার সংক্রমণ রোধে এর আগে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে সরকারি- বেসরকারি অফিসগুলার সঙ্গে সঙ্গে দোকান-পাট ও বিপণিবিতানগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক দফায় তা বাড়ানো হয়। তবে এরইমধ্যে বগুড়ায় করোনায় আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ায় গত ২১ এপ্রিল থেকে জেলাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৯ মে পর্যন্ত এ জেলায় মোট ৩৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন বাংলানিউজকে জানান, দোকান-পাট ও মার্কেট খোলা হলে সেখানে মানুষ ভিড় করবে বলেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। যেহেতু আমরা সচেতন নই, তাই কোনো কিছু দিয়েই মানুষের স্রোত ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি চলমান মহামারি পরিস্থিতিতে আমাদের ঈদের কেনা-কাটা থেকে দূরে থাকাই উচিত। কেননা আগে জীবন তারপর খুশি-আনন্দ।

বগুড়ায় পুলিশের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনতান চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, সরকারিভাবেই প্রত্যেকে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে। এটা হলো ব্যক্তি সচেতনতার বিষয়। তবে বিকেল ৪টার পর কোনো দোকান যেন খোলা না থাকে সে বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২০
কেইউএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।