ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেভারেজ খাতে ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৭ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২০
বেভারেজ খাতে ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে সাধারণ ছুটি থাকায় বেচাকেনা বন্ধ ও বাজারে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য তুলে নিলে ১০-১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে দেশের কোমল পানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর।

গ্রীষ্মকাল এসব পানীয় বিক্রির সবচেয়ে বড় মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও ৮০ শতাংশ বেচা বিক্রি কমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বেড়ে যায় কার্বোনেটেড বেভারেজ, লাচ্ছি ও লাবানের মতো দুগ্ধজাতীয় পণ্যের।

উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সারাবছর যে পরিমাণ বেভারেজ পণ্য বিক্রি করে তার ৬০-৬৫ শতাংশ বিক্রি হয় মার্চ থেকে শুরু হয়ে জুলাই মাস পর্যন্ত। কিন্তু করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সেই বিক্রি তলানীতে নেমে এসেছে চলতি বছর। মার্চ এবং এপ্রিল এ দুই মাসে ছয় থেকে সাত হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হারিয়েছে বেভারেজ খাত। এ অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। এদিকে দুই ঈদকে কেন্দ্র করে যেখানে ৩০ শতাংশের মতো পানীয় বিক্রি হতো। এবার সেটাও হুমকির মধ্যে রয়েছে।

প্রাণ বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, কোমল পানীয়র চাহিদা প্রথম দিকে একটু কম ছিল। তারপরও আমি বলবো মানুষ চিল ড্রিংকসটা পান করছেন। তবে ঠাণ্ডা পানীয় এড়িয়ে চলছেন মানুষ। ফলে কার্বোনেটেড সফট ড্রিংকসের বিক্রি অন্য গ্রীষ্মকালের চেয়ে অনেক কম। মানুষ ঘরে বন্দি, অনেক দোকানপাট বন্ধ। এসব কারণে বেভারেজ বিক্রি অনেক কমে গেছে।    

আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের হেড অব মার্কেটিং মাইদুল ইসলাম বলেন, বিক্রি ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। বাকি ৯০ শতাংশ বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। জুসের যে মার্কেটটা ছিল সেটাও একেবারে ধসে পড়েছে। মানুষ দোকানে না গেলে কিনবে কিভাবে। রমজান মাসে ইফতার পার্টিতে অনেক পানীয় ব্যবহার হতো। সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে।

দেশে ৮ থেতে ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার গড়ে উঠেছে কার্বোনেটেড কোমল পানীয়র। প্রতিবছর বাড়ছে ১০ শতাংশ করে। এছাড়া দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে জুস ও দুগ্ধজাত পানীয়র ব্যবসাও। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বাজার গড়ে উঠেছে এখানেও। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণে ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সব ধরনের পানীয় ব্যবসায়।

মাইদুল ইসলাম বলেন, শুধু মার্চ এবং এপ্রিল দুই মাসের হিসাব করলে আমাদের লোকসান হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যেসব পণ্য উৎপাদন করা হয়েছে, সেসব পণ্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে আর গ্রাহকের কাছে দেওয়া যাবে না। একারণে আরও ৪-৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ১০-১২ হাজার কোটি টাকার একটি ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে বেভারেজ শিল্প।

এমন পরিস্থিতিতে শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে কর সহজীকরণসহ সরকারি সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২০
এসই/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।