ঈদের আর কয়েকদিন বাকি থাকলেও করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট। এতে বেচাকেনা বন্ধ থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা তেমন ব্যাংকমুখী হচ্ছেন না।
প্রতিবছর ঈদের আগে ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে যায়। সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে অনেক ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরাও ব্যাংক থেকে টাকা তোলেন। আবার ঈদের বেচাকেনা করে অনেক ব্যবসায়ী টাকা ব্যাংকেও জমা দেন।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে ২৫ মার্চ থেকে। চলবে ১৬ মে পর্যন্ত। ১০ মে হতে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খোলার জন্য সরকারের নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ বড় বড় বিপণীবিতান বন্ধ রয়েছে। ঘরের বাইরে মানুষের আনাগোনা কম। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্য। এতে আগের বছরের মতো ঈদ কেন্দ্রিক লেনদেনের প্রভাব পড়েনি ব্যাংকগুলোতেও।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক সোনালীর স্থানীয় শাখায় গিয়ে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকজন গ্রাহক টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। আবার অনেক গ্রাহক এসেছেন সঞ্চয়পত্রের সুদের টাকা তোলার জন্য।
সেখানে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাশেদুল কবিরের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মা-বাবার জন্য বাড়িতে টাকা পাঠাতে এসেছি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোথাও যাচ্ছে না।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন এসেছেন সঞ্চয়পত্রের সুদের টাকা নিতে। তিনি বলেন, ঈদের আগে বাজার-সদাই করতে টাকার প্রয়োজন। তাই ব্যাংকে এসেছি।
সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর ঈদের টাকা তোলা ও জমা দিতে যেভাবে ভিড় লাগে এ বছর সেটা নাই। সব ধরনের লেনদেন চালু থাকলেও ঋণপত্র খোলা ও গ্রাহক টাকা তোলার জন্যই আসছেন। ব্যবসায়ীদের টাকা জমা ও তোলার পরিমাণ খুবই কম।
সোনালী ব্যাংকের মতো, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় গিয়ে দেখা যায়নি গ্রাহকের লম্বা লাইন। একইভাবে গ্রাহকের উপস্থিতি রয়েছে মতিঝিলে অবস্থিত বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলোতে।
জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খান ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গ্রাহকদের সব ধরণের সেবা দিচ্ছি। যারা টাকা নিতে আসছেন দেওয়া হচ্ছে, যারা জমা দিতে আসছেন নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমসহ সবধরণের কার্যক্রম চালু রয়েছে। বিগত সময়ে ঈদের আগে যেভাবে গ্রাহকদের চাপ বাড়ে এবার সেটা নাই।
বেসরকারি এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে গেছে। সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুললেও অপ্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এতে ব্যবসা বাণিজ্য কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যাংকগুলোতেও। ছোট ছোট আমানতকারীরা টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। জমা হচ্ছে কম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২০
এসই/এনটি