শনিবার (২৩ মে) রাজধানীর মিরপুর-১, ২, ১০, ১১, ১৩, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকা ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ১০ মে থেকে মার্কেট খুলেছি।
এ ব্যাপারে মিরপুর-২ নম্বর সেকশনে অবস্থিত চন্দ্রপুরীর ব্র্যাঞ্চ ইনচার্জ সুজিত বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকান খুলছি। বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়লেও আশানুরূপ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বেচাকেনা আমাদের হতাশ করেছে। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এমনটি হয়েছে।
দিন শেষে বেচাবিক্রি আমাদের হতাশ করছে বলে জানালেন মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনে অবস্থিত ফেইথ ইলেভেনের সেলস ম্যানেজার জনি।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে মার্কেট খোলার পর দুপুর পেরিয়ে গেলেও আমাদের বেচা-বিক্রি একেবারেই নেই।
জনি বলেন, ক্রেতাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দিয়েছি। তারপরও ক্রেতা নেই মার্কেটে। এ কয়েকদিনের বিক্রিতে দোকান ভাড়া ও আমাদের বেতন হবে কিনা সেটি নিয়েই আমরা চিন্তিত।
এদিকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শেখ কামাল। তিনি বাচ্চার কাপড় কিনতে এসেছেন মিরপুর মার্কেটে। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে বাচ্চার জন্য কাপড় কিনলাম। আর একজোড়া জুতা নিয়ে দ্রুত চলে যাবো। করোনা পরিস্থিতির কারণে একেবারে বাসা থেকে বের হই না।
অপরদিকে রাজধানীর ফুটপাতে বেচাবিক্রি একেবারেই নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনে ফুটপাতের দোকানি মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, একেবারেই বেচাকেনা নেই। মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। রোববার (২৪ মে) আরও বেচাকেনা খারাপ হবে।
তবে রাজধানীর প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশ মুখেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশ মুখ থেকেই হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বার বার সতর্ক করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। আমরা সেটি মেনে চলছি এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও যমুনা ফিউচার পার্ক খুলেনি। একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এ ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় এক ঘণ্টা কমানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।
বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এসএমএকে/আরবি/