শনিবার (২৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের উপস্থিতিতে এবং জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সমন্বিত জেলা কমিটির এক জরুরি সভার সিদ্ধান্তে মার্কেট খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও সাধারণ শাখা ওবাইদুর রহমান জানান, এরআগে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দোকান-পাটের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের দুরাবস্থা নিরসনের দাবির মুখে গত ১০ মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কঠোর শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট ও শপিংমল সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন।
>>>কুষ্টিয়ায় শপিংমল খোলা নিয়ে পুলিশ-ব্যবসায়ী উত্তেজনা
কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এসএম কাদরী শাকিল বলেন, লকডাউনে ঈদের আগের মার্কেট বন্ধে একদিকে ব্যবসায়ীদের দুরবস্থায় নিষেধাজ্ঞা না মেনে কিছু কিছু দোকানের সার্টার খুলে ভিতরে ক্রেতাদের ঢুকিয়ে কেনা-বেচার কারণে চরমভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব লংঘন হচ্ছে এমন অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা এবং পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটার অভিযোগে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা শনিবার সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানা চত্বরে ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এসময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নেতারা সংহতি জানিয়ে অন্তত ঈদের আগের এই দুইদিন দোকান, মার্কেট ও শপিংমল খোলা রাখার দাবি জানান।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, লকডাউন হতে হবে সবার জন্য, আপনারা জেলার বাইরে থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে আগতদের নির্বিঘ্নে ঢুকতে দিয়ে যদি করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় তাহলে কেবলমাত্র ব্যবসায়ীরাই সংক্রমণ ঝুঁকির দায় নিবে কেন?
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন দোকানপাট খুলে দেওয়ার ব্যপারে জেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন ‘আজ ২৩ মে ২০২০ শনিবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় ক্রেতাদের চাহিদা, বিভিন্ন দোকানির ক্রয় করা মালামাল বিক্রয় না হওয়ায় ব্যাপক লোকাসনের মুখোমুখি হওয়ায় আগামী ঈদুল ফিতর পর্যন্ত দোকান-পাট, বিক্রয় কেন্দ্র, শপিংমলসমূহ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব প্রতিপালন করে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাবধানে থাকুন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, অতি-প্রয়োজনীয় না হলে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন। ’
>>>স্বাস্থ্যবিধি না মানায় কুষ্টিয়ায় দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এইসএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে এভাবে মার্কেট ও শপিংমল খুলে দেওয়া মানে হলো- আমরা নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার দরজা খুলে দিলাম। অনেকটা বলা যায় এই সিদ্ধান্তটা জেলাবাসীর স্বাস্থ্যের জন্য একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তবে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে- নিজে বাঁচুন দেশকে বাঁচান। নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ থাকুন। বাকিটা আল্লার ইচ্ছা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এনটি