ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজেটে প্রণোদনা প্যাকেজ মনিটরিং প্রক্রিয়া স্পষ্টের প্রস্তাব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২০
বাজেটে প্রণোদনা প্যাকেজ মনিটরিং প্রক্রিয়া স্পষ্টের প্রস্তাব

ঢাকা: বর্তমান সঙ্কটের ফলে এটি স্পষ্ট যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো খাতগুলোতে আমাদের সরকারি ব্যয় অনেক বেশি বাড়াতে হবে। আগামী বাজেটে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন ও এটি মনিটরিং করার প্রক্রিয়া স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাতে এ প্রণোদনা প্যাকেজের সুফল পায়।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) উদ্যোগ ইন্টারনেটভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘সানেম নেটিজেন ফোরাম’ এর সপ্তম পর্বে সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান এ সব কথা বলেন।

বুধবার (৩ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রস্তাবের কথা জানানো হয়েছে।

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করে ড. রায়হান প্রস্তাবিত বাজেট এবং মূলবাজেটের পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, দেখা গেছে যে, প্রস্তাবিত বাজেটের শুধু ৭৭ থেকে ৭৮ শতাংশ বাস্তবায়িত হয় এবং এ সংক্রান্ত তথ্য বাজেটের এক থেকে দেড় বছর পরে পাওয়া যায়। গত এক দশক ধরে বাজেটে মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশ ঘাটতি বজায় রাখা গিয়েছে তার অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষাখাতে খুবই সামান্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

আসন্ন বাজেটে এ ধারা অনুসরণ করা যাবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধু বরাদ্দ বাড়ালেই হবে না, মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতা না বাড়াতে পারলে এ বর্ধিত বরাদ্দ কাজে লাগানো যাবে না। তাই বরাদ্দ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ এবং বাজেট ঠিকমত বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা তার জন্য একটি মনিটরিং এবং মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

ড. রায়হান বলেন, অপ্রয়োজনীয় সরকারি ব্যয় অবশ্যই রোধ করতে হবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের জন্য অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রেও একটি অগ্রাধিকারের ক্রমতালিকা করতে হবে। প্রবৃদ্ধি হার নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং পিআইই অর্থাৎ প্রোভার্টি, ইকোয়ালিটি, এডুকেশনের প্রতি মনোযোগ দিতে আহ্বান জানান তিনি। এই তিনটি ইন্ডিকেটরই বর্তমান সঙ্কটে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ড. রায়হান আরও বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের বিতরণের ওপর সার্বক্ষণিক তথ্য সরবরাহ করা দরকার, যাতে করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।

সূচনা বক্তব্যে ড. সেলিম রায়হান প্রথমেই বাংলাদেশে লকডাউন শিথিল করার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার অধীনে করা হয়নি। প্রতিদিন যখন সংক্রমণের এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তখন লকডাউন শিথিল করা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। লকডাউন শিথিল করার ফলে করোনা ভাইরাস রোগের বিস্তার ঘটলে যে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষতি হবে, সেটি অর্থনীতি পুনরায় চালু করে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। উল্টো, পরবর্তীতে আরও কঠোর লকডাউন আরোপ করতে হতে পারে।

রোগের বিস্তারের ওপর ভিত্তি করে দেশকে কয়েকটি জোনে ভাগ করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরণের নীতি লকডাউন শিথিলের আরও আগে নেওয়া দরকার ছিলো।

ড. সেলিম  রায়হানের পরিচালনায় আলোচনায় জুমের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গণের প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি এ পর্বে অংশ নেন। এছাড়া সানেম টিমে ছিলেন সানেমের গবেষণা পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক ও সানেমের রিসার্চ ফেলো মাহতাব উদ্দিন, রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ইশরাত শারমীন, মীর আশরাফুন নাহার, ফাবিহা বুশরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২০
এসই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।