হাটে আগতদের চলাফেরা ও আচার আচরণ দেখে মনে হয় করোনা কিছুই না। স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
বেতাগা ফকিরহাট উপজেলার সব থেকে বড় পশুরহাট। সপ্তাহে দুইদিন (শুক্রবার ও সোমবার) এ হাট বসে। দূর-দূরান্ত থেকে এই হাটে মানুষ আসে পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে।
শুক্রবার (৫ জুন) দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ পশু বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। ক্রেতা বিক্রেতাসহ এক হাজারের বেশি লোকের সমাগম। যে যার মত ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যস্ত। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। হাটে আগতদের এমন অবস্থা দেখে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রয়োজনের তাগিতে হাটে এসেছে।
হাটে আসা ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলেন, হাটে না এলে সংসার চলবে না, জীবন বাঁচানোর জন্যই হাটে এসেছি। ঝুঁকি আছে জানি, তবুও পরিবারকে নিয়ে খেয়ে বাঁচতে হবে।
মাস্ক ছাড়া হাটে এসে অনেক মানুষের কাছে কেন যাচ্ছেন এমন প্রশ্নে কামরুল মল্লিক নামে এক ছাগল বিক্রেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অনেকদিন কাজ করতে পারিনি। ঘরের চালও ফুরিয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে পোষা দুটি ছাগল নিয়ে হাটে আসছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাটের পাশের একাধিক ব্যক্তি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এভাবে হাট চালিয়ে আমাদের সবাইকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। হাটে আসা কোনো একজন মানুষের মধ্যে যদি করোনা থাকে তাহলে সবার মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা সবাই বিপদে পরে যাব। হাটের ইজারাদার আনন্দ দাসকে বিষয়টি বললেও তিনি আমাদের কথায় কর্ণপাত করেন না।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য হাটের ইজারাদার আনন্দ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. শাহনাজ পারভীন বলেন, শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট-বাজার চালু করতে মাইকিংসহ সব ধরনের প্রচারণা চালানো হয়েছে। শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বেতাগা পশুর হাটের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যদি শারীরিক দূরত্ব না মানা হয় তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তী হাটের দিন (সোমবার) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাট পরিদর্শনের কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২০
আরএ