সংশিষ্ট দপ্তর থেকে জানা গেছে, সাংসদ ছাড়াও উভয় দপ্তরে জেলা-উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র ও জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ তিন শতাধিক অনুরোধ পত্র পাঠানো হয়েছে। লাখ লাখ হতদরিদ্র শ্রমিকের জীবন-জীবিকার একমাত্র কর্মসংস্থান রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এসব পত্র দিয়েছেন তারা।
ডিও লেটারে সংসদ সদস্যগণ উল্লেখ করেছেন, বিড়ি শিল্প দেশের একটি প্রাচীন শ্রমঘন কুটির শিল্প। এই শিল্প সরকারকে রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি হতদরিদ্র শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে এ শিল্পটি চালু হয়েছে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বিড়ি কারখানাগুলোতে অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। এই নারী শ্রমিকদের বেশিরভাগ বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে বিড়ি কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে এসব শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।
এছাড়া, বর্তমান মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে থাকা বিড়ি কারখানাগুলোর শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। এসব শ্রমিকদের কর্ম বন্ধ থাকলেও থেমে নেই তাদের জীবনযাত্রার চাহিদা। এ অবস্থায় লাখ লাখ শ্রমিকদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব বিড়ি মালিকদের নিতে হচ্ছে।
তাই দেশের লাখো গ্রামীণ দরিদ্র বিড়ি শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে আগামী ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটে বিড়ির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি না করে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিও লেটার প্রদান করাদের মধ্যে রয়েছেন- কিশোরগঞ্জ-০৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক চুন্নু, বরগুনা-০১ আসনের সাংসদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, নওগাঁ-০৩ আসনের সাংসদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. ছলিম উদ্দীন তরফদার, নীলফামারী-০৪ আসনের সাংসদ আহসান আদেলুর রহমান, বরিশাল-০৬ আসনের সাংসদ নাসরিন জাহান রত্না, কুড়িগ্রাম-০৩ আসনের সাংসদ এম এ মতিন, ঢাকা-০৪ আসনের সাংসদ আবু হোসেন বাবলা, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহবুবুর রহমান ডাবলু, জয়পুরহাট ক্ষেতলাল উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকিম মন্ডল, বগুড়া ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহ, দিনাজপুর ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র মো. আব্দুস সাত্তার মিলন, রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক মিন্টু মিয়া প্রমুখ।
এদিকে, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে বিড়ি উৎপাদন ও বিক্রয় বন্ধ না করাসহ আগামী বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। গতমাস থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন এসব শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের দাবি বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে কোনভাবে বিড়ি শিল্প বন্ধ করা যাবে না। বরং বিড়ি শিল্পের উপর শুল্ক কমিয়ে এ শিল্পকে বাঁচানোর দাবি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২০
এমআইএস/পিএম/এমকেআর