ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তহবিলের জোগান বাড়াতে হবে: বিপিজিএমইএ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তহবিলের জোগান বাড়াতে হবে: বিপিজিএমইএ

ঢাকা: লক্ষ্য পূরণ ও সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিতে হবে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। 

রোববার (১৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো জাতীয় বাজেট ২০২০-২১ এর ওপর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিতকরণ, নতুন শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের লক্ষ্য প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করেছেন-এটা সরকারের অত্যন্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।

তবে এসব লক্ষ্য পূরণ ও সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিতে হবে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ।  

জসিম উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে রি-সাইক্লিং করে প্লাস্টিক দানা উৎপাদন পরিবেশ বান্ধব-এর মূসক অব্যাহতি দেওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারিতে নিম্ন আয়ের দরিদ্র ও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যবহার্য প্লাস্টিকের থালা-বাসন, জগ-মগ, বাটি, গ্লাস, সবজি ধোয়ার ব্যবহার্য জালি, গামলা, বালতি, খাবার ঢাকার ঢাকনি, ঝুড়ি, বদনা, সাবান দানি, মশলার ট্রে, পিড়ি বা টুল, ময়লার ঝুড়ি, হাতপাখা থেকে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। ভ্যাট দিয়ে বর্তমানে এ সমস্ত পণ্য অতি দরিদ্র তৃণমূলের মানুষ ক্রয় করতে পারবেন না। কাজেই টিফিন ক্যারিয়ার ও পানির বোতলের মতো উল্লিখিত পণ্য থেকে মূসক অব্যাহতির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।  

একইসঙ্গে এনবিআর এর সাধারণ আদেশ ১৭/মূসক/২০১৯ তাং ১৭/০৭/১৯ইং এর মাধ্যমে প্লাস্টিক সেক্টরের সব উৎপাদিত পণ্যকে টার্নওভার নির্বিশেষে ভ্যাটের আওতায় নিবন্ধিত করার বিধান চালু করেছেন। ফলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প ভ্যাট দিয়ে কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে না। ভ্যাট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এনবিআর এর ওই সাধারণ আদেশ বাতিল করার অনুরোধ জানান তিনি।  

জসিম উদ্দিন বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে, ঘোষিত প্রণোদনা ও অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা প্রদান প্রক্রিয়া বাস্তবভিত্তিক, সহজ এবং সরল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, সমিতি, চেম্বার, এফবিসিসিআই এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটির তত্ত্বাবধানে অনুদান, ঋণ এবং বিনিয়োগের মঞ্জুরি ও অন্যান্য সহায়তা অনুমোদন প্রদান করার বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করা আবশ্যক, অন্যথায় ক্ষুদ্র, ছোট-মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা এ সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হবে বড় জোর দুই লাখ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ২০২০-২১ অর্থবছরে নিম্নমুখী অর্থনৈতিক পরিবেশে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হয়নি বলে মনে হয়। এতে উৎপাদন খাতসহ সাধারণ ভোক্তাদের অতিরিক্ত পরোক্ষ করভার বহন করতে হবে। বাজেটে শুল্ক ও কর বিষয়ে জন প্রত্যাশা অনুযায়ী আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে বাজেট আরও কল্যাণকর হবে বলে আমরা মনে করছি।

বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ব্যবসায় পরিচালনার (ডুয়িং বিজনেস) জটিলতা অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে এনবিআর অটোমেশনের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, তা পুরোপুরি দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে।  

জসিম উদ্দিন বলেন, অষ্টম খাত হিসেবে অত্যন্ত ভোক্তাবান্ধব এবং অপার সম্ভাবনাময় প্লাস্টিক খাতকে কর অবকাশ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।  

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও আগামী অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে মোকাবিলার লক্ষ্যে যে বাজেট পেশ করেছেন তার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দনও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
এসএমএকে/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।