এরফলে ওয়ালটন এখন বাংলাদেশে ডলবির অফিশিয়াল সাউন্ড কোয়ালিটির টিভি তৈরিতে পার্টনার হলো। এতে বাংলাদেশে তৈরি বিশ্বমানের ওয়ালটন টেলিভিশন বহিঃবির্শ্বে আরও বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
উল্লেখ্য, ডলবি ল্যাবরেটরিস আমেরিকাভিত্তিক একটি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি। যারা শব্দ বা অডিওর বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। ডলবি প্রযুক্তির বিশেষত্ব হচ্ছে অডিওর নয়েজ কমানো এবং অডিও কোয়ালিটি বাড়ানো। সাউন্ড সিস্টেমের জগতে সারা বিশ্বে ডলবি অপ্রতিদ্বন্দ্বি। ডলবি শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী উৎপাদনকারীদের তার প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেয়।
জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয় ডলবির প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়ালটন টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন। ওই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডলবি ল্যাবরেটরিসের সিনিয়র ডিরেক্টর ভিভিয়ান ই ভাসাল্লো।
এরই ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি ডলবির ‘লাইসেন্সড ম্যানুফ্যাকাচারার’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ইতোমধ্যেই ডলবি তার নিজস্ব ওয়েবসাইট https://bit.ly/2zuVlSu এ ‘লাইসেন্সড ডলবি ম্যানুফ্যাকচারার’ তালিকায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ-এর নাম অন্তর্ভূক্ত করেছে।
এ প্রসঙ্গে মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, ডলবি হলো শব্দ বা অডিও’র সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। কোনো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া এবং পার্টনার করে নেওয়ার ক্ষেত্রে ডলবি বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে। এর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ সুসজ্জ্বিত গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) সেন্টার, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী টিভি উৎপাদন, রপ্তানি বাজারে চাহিদা, স্থানীয় বাজারে উল্লেখযোগ্য মার্কেট শেয়ার ইত্যাদি। যেসব টিভি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসব শর্ত পূরণ করতে সমর্থ্য হয়, তাদেরকেই ডলবি ‘লাইসেন্সড ম্যানুফ্যাকাচারার’ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে।
উল্লেখ্য, টেলিভিশন উৎপাদনে ওয়ালটনের রয়েছে নিজস্ব গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) সেন্টার। যেখানে একঝাঁক দক্ষ ও মেধাবী প্রকৌশলী প্রতিনিয়ত টিভির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার নিয়ে কাজ করছেন। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের নিজস্ব কারখানায় টিভির মাদারবোর্ডের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার তৈরি হচ্ছে। ওয়ালটন টিভি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। দেশের বাজারেও শীর্ষে ওয়ালটন। আন্তর্জাতিক মানের ওয়ালটন টিভি রপ্তানি হচ্ছে জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে ওয়ালটনকে সনদ দিয়েছে ডলবি। বাংলাদেশে ওয়ালটনই ডলবির লাইসেন্স পাওয়া প্রথম ও একমাত্র কোম্পানি।
ওয়ালটন টিভির কেন্দ্রীয় ল্যাব ম্যানেজার প্রকৌশলী রকিবুল হাসান জানান, ডলবির কাছ থেকে এটমসসহ এমএস১২ প্যাকেজ এবং ডলবিএসি-৪ কনজ্যুমার ডিকোর্ডার ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে ওয়ালটন। এরফলে ডলবি ডিজিটাল, ডলবি ডিজিটাল প্লাস, ডলবি এটমসসহ ডলবির সবগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে ওয়ালটন।
ডলবির প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে হাই কোয়ালিটি সাউন্ড উৎপন্ন করতে কম সময় ও ডেটা লাগবে। টিভির শব্দ হবে আরও জীবন্তু ও প্রান্তবন্ত। মনে হবে প্রকৃতি থেকে আসা শব্দ সরাসরি গ্রাহক শুনতে পাচ্ছেন। ব্লু-রে ডিস্ক এবং অনলাইন স্ট্রিমিং সাইট যেমন নেটফ্লিক্স, ভিউডু, অ্যামাজন ফায়ার টিভি থেকে ভিডিও দেখার সময় এইচডি সাউন্ড কোয়ালিটি পাবেন গ্রাহক। অডিওর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ডলবি এটমস ব্যবহারে শব্দের ক্রিমাত্রিক (থ্রিডি) অনভূতি মিলবে।
ওয়ালটন টিভি গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, টিভির মানোন্নয়নের পাশাপাশি তারা যুক্ত করছেন লেটেস্ট প্রযুক্তি ও ফিচার। এরইমধ্যে ওয়ালটন টিভিতে যুক্ত হয়েছে দ্রুত গতি সম্পন্ন ইউজার-ফ্রেন্ডলি নিজস্ব উদ্ভাবিত ‘আরওএস’ বা রেজভী অপারেটিং সিস্টেম’। এছাড়া স্থানীয় গ্রাহকদের জন্য ওয়ালটনই প্রথম বাংলা ভয়েস সার্চ অপশন যুক্ত স্মার্ট টিভি বাজারে ছেড়েছে।
বর্তমানে বাজারে আছে ৬১০ মিলিমিটার থেকে ১.৩৯৭ মিটারের ২৪ মডেলের টিভি। যার মধ্যে রয়েছে ফোর-কে, ফুল এইচডি, এইচডি রেজুলেশনের স্মার্ট ও নন-স্মার্ট এলইডি টিভি। দাম ১০ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৯৯ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে।
এদিকে, ‘ঈদ সুপার সেভার ডিল’ অফারের আওতায় যেকোনো মডেলের ওয়ালটন টেলিভিশন কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করলেই মিলছে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত নিশ্চিত মূল্যছাড়। এছাড়া, টিভি এক্সচেঞ্জ মেলার আওতায় পুরনো যে কোনো ব্র্র্যান্ডের সচল বা অচল সিআরটি, এলসিডি কিংবা এলইডি টিভি বদলে আকর্ষণীয় ছাড়ে ওয়ালটনের নতুন এলইডি, স্মার্ট এলইডি ও স্মার্ট ভয়েস কন্ট্রোল টিভি কেনার সুযোগ রয়েছে।
ছয় মাসের রিপ্লেসমেন্টসহ ৮১৩ মিলিমিটার বা তদুর্ধ্ব সাইজের এলইডি ও স্মার্ট টিভির প্যানেলে ৪ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি দিচ্ছে ওয়ালটন। দেশজুড়ে ৭৪টি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
আরআইএস/