ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দুর্বিষহ জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
করোনায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দুর্বিষহ জীবন করোনায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দুর্বিষহ জীবন।

ঢাকা: দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক খোলা স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় সবজিসহ খুচরা নিত্যপণ্যের বাজার। এসময় বন্ধ হয়ে যায় ফুটপাতের দোকান। ব্যবসা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়তে হয় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের। কোনো উপায় না পেয়ে তাদের অনেকেই গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

অন্যদিকে যারা নগরের অধিবাসী, তারা ভ্যানগাড়িতে কিংবা ফেরি করে পাড়া-মহল্লার গলিপথে বসে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন। তবে এবার সে সুযোগটুকুও বন্ধ হতে বসেছে।

নগরে বেপরোয়া গতিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় কমেছে তাদের বেচাকেনা। ফলে বাসাভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যোগান নিয়ে দুশ্চিন্তায় দুর্বিষহ জীবন পার করছেন তারা।

সোমবার (১৫ জুন) কথা হয় এমন এক ব্যবসায়ী সুজনের সঙ্গে। তিনি এর আগে গুলিস্তান ফুটপাতে ছোটদের পোশাক বিক্রি করতেন। এখনো পোশাক বিক্রি করলেও তার ব্যবসার ধরন পাল্টেছে। ফুটপাতের পরিবর্তে এখন ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার গলিপথে বসেন। আগের মতো বিক্রি আর নেই, সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তার।

সুজন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগে দিনে সাতশ’ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হতো। আজ (১৫ জুন) দুপুর হয়ে গেলো অথচ বিক্রি হয়েছে তিনশ’ টাকা। জানিনা দিনের বাকি অংশে (৪টা পর্যন্ত) আর কত বিক্রি হবে। এখন পরিবার নিয়ে চলতে পারছি না। বাসাভাড়া নিয়ে চিন্তা হয়, চাল-ডালের কথাতো বাদই দিলাম। ’

করোনায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দুর্বিষহ জীবন। একই কথা জানান ব্যবসায়ী রফিক। এর আগে তিনি খিলগাঁও ঝিলপাড়ে ফুটপাতে জুতার ব্যবসা করে সংসার চালাতেন। দুপর পর্যন্ত বেচাকেনা হয়েছে ৭২০ টাকার।

তিনি বলেন, ‘আগে ঝিলপাড়ে বসে ব্যবসা করতাম। ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই ছিলাম। এখন করোনার থাবায় সব শেষ হতে চলেছে। বিক্রি নাই, অন্য ব্যবসা করবো সে পুঁজিও নাই। এখন পরিবারে জন্য ভালো খাবার নিতে পারি না। জানি না এ পরিস্থিতি কতদিন থাকবে, আল্লাহ হেফাজত করো, আর পারি না। ’

এ ব্যবসায়ীর কাছে জুতা কিনতে আসা নয়ন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘ভাই এখন আর মানুষের কাছে টাকা-পয়সা নাই। তাদের কাজ না থাকলে টাকা-পয়সা কোথা থেকে আসবে? তাই অনেকেই মিতব্যয়ী হয়েছেন। অনেকের পণ্য প্রয়োজন, কিন্তু অর্থ নেই। তবে আয় থাকলে, পরিবেশ ভালো থাকলে, সবাই ভালো থাকে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
ইতআর/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।