বুধবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) এবং ইউএস চেম্বার-এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একটি অনলাইন সম্মেলনে (ওয়েবিনার) এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ বিশেষ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সংগঠনসমূহের মধ্যে এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, ডিসিসিআই, বিজিএমইএ, বেসিস, এলএফএমএবি, বিএপিআই এবং বাংলাদেশ-মার্কিন যৌথ বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্মেলনে সংযুক্ত ছিলেন।
এদিকে মার্কিন চেম্বারের পক্ষে শতাধিক মার্কিন কোম্পানি ও উদ্যোক্তাসহ ইউএসটিআর, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে যোগদানকারী মার্কিন কোম্পানিসমূহের মধ্যে অন্যতম শেভরন, টার্গেট, প্রাইমা ডলার, জারা, এক্সন, মবিল, হেলথ কেয়ার ইত্যাদি। তারা বিনিয়োগ ও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্মেলনটি পিএমও থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশা বিসওয়াল যৌথভাবে সঞ্চালন করেন।
এ অনলাইন সম্মেলনে দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে কারিগরি পর্যায়ে একাধিক সভা আয়োজন এবং বাংলাদেশ-ইউএস বাণিজ্য কাউন্সিল গঠন করার বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়।
কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখা, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাপনা সংহতকরণ এবং বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা এবং দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগক্ষেত্রসমূহ সম্প্রসারিত করার বিষয়ে আলোচনা হয় এ অনলাইন সম্মেলনে।
মার্কিন চেম্বারের পক্ষে নিশা বিসওয়াল স্বাগত বক্তব্য দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অগ্রগতির চিত্র এবং সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বিভিন্ন প্যাকেজে সরকারের প্রণোদনা ও সহায়তার কথা তুলে ধরেন।
মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ সুরক্ষায় আইনি সুরক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি কোভিড-১৯ পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা পুনর্ব্যাক্ত করেন এবং মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে উদাত্ত আহবান জানান।
এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে আইসিটি খাতের সম্ভাবনার চিত্র মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরেন এবং এখাতে দেশে বিদ্যমান দক্ষ জনবল বিষয়ে তাদের অবহিত করেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ হাইটেক পার্কসহ আইসিটি খাতে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ ও সরকারের দেওয়া সুযোগ সুবিধার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ইউএস চেম্বার।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ, পণ্য ও সেবা আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন মার্কিন বিনিয়োগকারীরা।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-মার্কিন যৌথ বিনিয়োগ ও ব্যবসা ক্ষেত্র অধিকতর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনেরও বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয় এ অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
এমইউএম/আরআইএস/